(মুক্ত গদ্য কবিতা)
~~
যে বৃষ্টিতে আমি আজও ভিজতে চাই, তুই সেখানে কৃপণ ছিলি। ঘনিয়ে থাকতো মেঘের রাশি... সজল মেঘ কাজল চোখে...। তবুও সেখানে আঙ্গুল ছোঁয়াতে ভরসা পাইনি। মেঘের উপরদেহাসির একটা রোদেলা চাদর ঝুলিয়ে রেখে বলেছিলি, ‘এই তো আকাশ...’। রোদ উঠেছে, কিন্তু সে রোদ লুটিয়ে পড়েনি ঘাসের বুকে। সেই আকাশে নরম ডানা উড়িয়ে দেয়নি পাখপাখালি। কেবল অচেনা রোদ ঝিলিক দিয়ে লুকিয়েছে।


রোদের কথা মনে হলেই দেখতে পাই, গাছপালার জাফরি-কাটা রোডে তোর নুপুর-পায়ের ছন্দে বাঁধা আলপনা। রোদ সেখানে ছায়ার সঙ্গে ছোঁয়াছুঁয়ি খেলতো, আর তোর পায়ের চলায়মান ছন্দে  সেখানে জন্ম নিত, কবিতারা সুর পেত। শব্দেরা নীরব অভিমানে ভেসে যেত গাছের শিখরে... তোর চোখের সরণী বেয়ে। মেঘের উর্ধে শূণ্যে...। আর সেখানেই তোর মেঘের শাম্পানে অশ্রুর মেখলা পেখম মেলত। সেখানে আল্লা-ভগবান একসঙ্গে এসে চোখ মোছাতেন।


সেই বৃষ্টি কোনও দিন এল না তো! কোনও দিন এসে পড়ল না তো তপ্ত মরুর বুকে! কোনোদিন ধ্বনিত হয়নি, “ইয়াম ঊদকেন তৃপ্যতায়”... আমি তোমার তৃষ্ণা মেটাতে জল দিলাম... । তৃষ্ণা... এক হৃদয় মরুতৃষ্ণা নিয়ে চাতকের মত প্রতীক্ষায়। শুধুই ‘ফটিক জল, ফটিক জল’ করে গেলাম। বারবার তাই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে তোকে সঙ্গে নিয়েই শুনে৩ছি, “ আমাদের জন্যেই বৃষ্টি এসেছে/ দারুণ প্রাণের টানে দু-কুল ভেসেছে...”।


আজ শুধুই একলা রাতের অন্ধকারে নিজের সঙ্গে মুখোমুখি। এখনও ভাবি, সত্যিই কি দু-কূল ভাসানো বৃষ্টি এসেছিল রোদ-ঢালা মেঘলা বিকেলে?


বাকপ্রতিমা, আন্দামান
পুজোসংখ্যা, ২০১৫