দলছুট কবিতারা-২


[মৃত্যু হয়েছে মানুষটার]। পারিবারিক কোলহ। ঠিক সন্ধ্যার মসজিদে আজান পড়ছে সাঁঝ ঘনালো, এমন সময়। নিজ বাড়ির, নীচ তলায় বসবাস। ঝগড়া নাকি মাঝে মাঝেই বাধে। আজ শুরু সাঁঝের আগে। স্বামী স্ত্রী এক সময় হাতাহাতি। মানুষ টা বেড় হল, জেদ মাথা গরম করে। সদর দরজা পেরিয়ে, সমুখ রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে, ঝগড়ার সূত্র ধরে রাগারাগি চলছে। এমন সময় রাস্তায় পড়ে গেল। লোকজন ধরাধরি, ডাকাডাকি করতে প্রাণ নাই। গলি পথেই রইল পড়ে মানুষ টা। বিশ গজ দূরে ঘরের দরজা। আর ঘরে ঢুকতে দেয়া হল না।


ঐ তাজা প্রাণ মানুষ টা এখন লাশ।
_____[০১]


রাতভর পাহারায় আঁধার রাত
লাশ টা এখন খাটিয়াতে; গরম জলে গোসল দিয়ে
আতর গোলাপ কর্পূর মেখে।


খাটিয়ার গা ঘেঁসে জ্বলছে আগবাতি
ওয়ারিশদের কান্না আর কান্না; আপন জনদের কত স্মৃতি?
এই বাড়িতেই জন্মেছিল, শিশু, কিশোর, যৌবন কাল।
[মধ্যবয়সী, চল্লিশর্দ্ধো]
হবে হয়তো একচল্লিশ, তেতাল্লিশ; কিংবা পঁয়তাল্লিশ
কিবা আসে যায় তাতে?


যেতে হবে ডাক পড়লে!
কেউ পারবে না টেনে রাখতে? অতি আপন জন
মা সন্তানেরা কই তারা তো পারলে না?
_____[০২]


মৃত্যু মানুষকে কাঙাল করে
মৃত্যু মানুষকে নিঃস্ব করে; মৃত্যু মানুষ চির অভাগা!
বড়ই অসহায় কাল
নিঃস্ব একা কি; কেউ থাকবে না পাশে।


চির অনাথ যেন প্রবাসী
কেউ ডাকবে না আর; সেও শুনবে না
এত এত মায়া কই গেল হায়?
জনম সদা চলা চলে; আকাশ তারায় খুঁজে ফেরা
না চোখে মিলে।


তাই জীবের কত কত স্বপ্ন সুধা ঘুরে
ঘুরে আনাচে কানাচে; সে তো গেল না ফেরার দেশে
মাটিতে শরীর সঁপে।
_____[০৩]


কেমন তরো বিধির বিধান
স্মৃতি পড়ে রয়?
মানুষটার যে প্রাণ নাই শুধু আকাশ পানে ধায়
আত্মা নামের দোলা চলে; উঠল সেই ঘরে
যেমন এসেছিল তেমনি ফিরে গেল।


মাঝখানে বসল স্মৃতির হাট
কত কত সাজানো বাহার?
রংধনু মোলাটে! রাঙা ফেরি, রঙিন ফেরিওয়ালা
স্মৃতির পরতে পরতে ঠাসা
[খতিয়ান বুনা কত কথা]।


নাটাই হাতে রাঙা ঘুড়ি
উড়ে উড়ে খলবল, খলবল মাতা মাতি
টান ধরেছে সুতোয় এবার; ঝড়ে বালুয়ারি
_______[০৪]


১৪২৫/ মাঘ/ শীতকাল।
[গতকাল সন্ধ্যায় সত্য ঘটনার প্রেক্ষিতে]