কবিতা-সপ্তক


।এক।।
দিগন্তের ঐ পিছু ছোটা,
              তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে
ঘাসফুলে ঐ ফড়িঙ দোলে।
নদীর বুকে ওমনি জোয়ার,
              ভাসান সুখে ঐ খেয়ামাঝি
কলসি কাঁকে গায়ের বধু।
আকাশ রাঙা মেঘেদের ভোজে,
              শরৎ তাই কাশফুলে সাদা
তেপান্তরে ঐ দিগন্ত আঁকা।


।দুই।।
বার বার ফিরে আসে ঋতু; দিন বদলের পালায়
ফিরে না সেই কৈশর; চন্দন ধুঁয়ায় ঐ যে সাঁঝ
আমলকি বনে আবির ছড়ায়; পুনঃ পুনঃ স্বপ্ন বিলায়
আঁজলা ভরে যতটুকু নেয়া; তা আজও একই অবয়ব
সপ্তরং এ রাঙা স্বপ্ন পুরাণ; জনম জনমের আঁধার।


।তিন।।
দক্ষিনের পাগলা হাওয়া
যখন গা ছুঁয়ে দিল!
আচমকা এ কোন বেদুইন?
তরবারি হাতে বিদ্রোহ যোদ্ধাবেশ
ঘোড়সওয়ার।
রাজকন্যা রক্ষার প্রত্যায় বুকে
প্রেম অনির্বাণ।
জীবন মৃত্যুরে নাহি ডরে।
সাত সাগর তের নদী পার
পাহাড় পর্বত ভেদিয়া
আকাশের ঐ স্বর্ণচূড় মহাশূণ্যের রনে
তুলিয়া বজ্রনিনাদ।


।চার।।
ক্ষুধা, ক্ষুধা, আর ক্ষুধার যন্ত্রনা। বর্নিল আকাশে আঁধার নেমে আসে। ঐ যে, পাথর চাপা তৃঞ্চা মহিমা। যদি বাঁচতে চাও তৃঞ্চায় সিদ্ধ হও। কুয়াশায় ঢেকে রাখ জীবন। প্রেমের উনুন জ্বেল না কভু। যদি চাওয়া দহনে সাধুবাদ, তো জ্বাল উনুন। বাসনার কঙ্কাল পোড়াও। দেখবে, বেঁচ আছ এক বুক যত্রণা সেধে।


।পাঁচ।।
পাঁচ কানের ভরসা ঐ
কান নিয়ে গেল চিলে, একটু খুঁজে দ্যাখো
ধুলায় যাচ্ছে গরাগরি।


চাঁদের পাহাড়ে মিছে ছুটাছুটি
নেই তো কোন বুড়ি? তবুও তো কাটছে সুতা
জোছনা চুমে মিছামিছি।


কোথায় সেই বাসনা কুঞ্জু?
চুপিচুপি লেখালেখি; উচ্ছ্বল ছুটাছুটি
এখন বেজায় সেকেলে বটে।


।ছয়।।
আঁড়ি তার সাথে,
             সেই কবে?
দিন ক্ষণ তো নেই মনে।
তয় কাল, সেতো
মহাকাল পেরুল বোদ হয়;


গুহাগাত্রে ছাপ আঁকা
             তারই।
ঠিক চিনেছি
সাঁঝ লালীমায় সেই একই
             আধেক চাওয়ার,
স্বপ্নবোনা আঁধার।


।সাত।।
এ কি স্বপ্নজারুল শরতের কার্তিক?
সাদা চন্দনের সাজ
শরীর জুড়ে এ কোন অমোঘ মায়া?
নাইর ঘিরে বধুয়া আঁচলে
মৌ মৌ স্বপ্ন উড়ে।


মৃত্তিকায় পলির আঁধার
এ কোন প্রচ্ছদের শিল্পরুপ আঁকে?
জলের ক্রন্দন
যত সামান্য ছিল আশ্রয়; তাও আরধ্য চায়
বেঁচে বর্তে, নগন্য জীবন।


১৪২৩/২৪, ভাদ্র/ শরৎকাল।