-----------প্রকৃত পারাবার
প্রকৃত পারাবার
আর কোথায় এমন আছে?
সুজলা সুফলা বিস্তর সবুজ মনোহর;
আর কোথায় এমন আছে?
বালুয়াড়ি মরু সাহারা সূর্যডোবার অপরুপ সোভা;
আর কোথায় এমন আছে?
পাহাড় পর্বতের উঁচু ছামিয়ানা ঝরণার কিন্নর ধ্বনী;
আর কোথায় এমন আছে?
খলবলিয়ে নদ নদীর কোলাহল;
আর কোথায় এমন আছে?
উত্তাল সাগর জলে নীলাভ ভাসান সম্মহোনি রুপ;


আর কোথায় এমন আছে?
প্রাণীর সৃষ্টি অবিরাম প্রকৃত পারাবার;


           মৃত্তিকা আঁধার
অঙ্করোদগম, সোদা মাটির ভাঁজে, আগল খোলা
আলোর নাচন, নিষিক্ত প্রণয়, আঁধার খেলায় মাতে
চঞ্চল বিহব্বল, থেমে গেছে প্রাতে, হাওয়ার সাথে সাথে
কত কথার বায়ু? উড়ে উড়ে বয়ে যায়, দিন রাত্রি ভেদে
জেগেছে মাটির ওমে, ফুটেছে পাতা, হালকা আলো হাওয়া ধরে।


            জীব জড়
ছুঁয়ে দেয় বাতাস
অজান্তেই; খুব কাছে তো ছিল সে!
শুধু শরীরই বুঝে
এক নিমেষেই; তবু সে ধরা দেয় না মোটেই
তার গায়ে রং নেই
তবু বেশ চেনা; অনুভবে সারা মেলে নিত্য
কথা কাজে থাকে বেশ
কখনো চঞ্চল উম্মাদ; ধ্বংস লীলায় আঁকে রেশ
তবু তারে ফিরে চাই
সর্বাঙ্গে; জড় তবু জীবের শ্বাস প্রশ্বাসে


             পথে পথিক
বায়ু সে তো,
হাওয়ার বেলোয়ারি; উড়ে উড়ে খেলায় খেলে
পৃথিবীর বুকে যখন যেথা; ইচ্ছা মতো স্বপ্ন ডানায় উড়ে।


খোলা আকাশে,
ঐ মেঘ সাজাল কে? থরে থরে শূণ্য মহাশূণের গায়
পথে হাঁটা ঐ পথিক পবন; সে তো চেয়ে বিস্ময়ে হতবাক হয়।


মেঘের গায়ে,
ঐ লেগেছে হাওয়া; জমাট খাঁজে ছুঁয়েছে প্রাণ
এবার সে তো ছুটছে বেগে; ঝর ঝরিয়ে বৃষ্টি ঐ দিগন্তের পরে।


              মিলিয়ে বিলিয়ে
দিন রাত্রির আদি অন্তে, যায় গড়িয়ে যায় মিলিয়ে। তফাৎ কিছু পাই না মিছে। হটাৎ আলোর ফুলঝুড়ি। সূর্য ওঠার। ওম ছড়িয়ে দিল বেশ। ছায়া খানিক। এদিক ওদিক আলো বিলায়। মিটে ক্ষুধা। মিলিয়ে যায় হটাৎ আলো। আঁধার নামের রাত্রি নামে। বিলিয়ে ছিল যা কিছু, মিলিয়ে গেল আঁধার ঢেকে।


            চপল চঞ্চল
এমনি খেলায় খেলছি মোরা
রাত্রি দিনের হিসেব জোড়া।
খেই হারিয়ে ফেলছি যারা
পথ হারিয়ে পড়ছি পাঁকে।


উঠরে জেগে উঠরে তোরা
ছিড়বে কে,রে বাঁধন হারা।
হারিয়েছে পথের ঐ দিশা
আলোর মশালে ঐ নিশানা।
আলো আঁধারের রাত্রি দিনে
চপল চঞ্চল ঐ গান যে ধরে।


            আকাশের গায়ে
আকাশের গায়ে ঐ রং লাগাল কে?
আকাশের গায়ে ঐ মেঘ সাজাল কে?
আকাশের গায়ে ঐ আঁকি বুকির ছাপ আঁকল কে?
আকাশের গায়ে ঐ সূর্য ঢলে গড়িয়ে যায় কেন?
আকাশের গায়ে ঐ জোছনা মাখা চাঁদ হাসে যে?
আকাশের গায়ে ঐ সিমানা আঁকে কে?
উড়াল পাখির উড়াল দিকে,
এ কোন পথের চিহ্ন আঁকে? যোজন যোজন দূরে
তার হিসাব কেহ নাহি জানে?
শূন্য, মহাশূণের নাই যে পারাবার
কোথায় তার দিক নিশানা কোন দিকেই বা তার পাড়?


           তবুও নৈশব্দে
জীব সহসা জড়তে মিশে
জড় বিলায়!
জীবের সম্মোহনে কদাচিত তার পিছু ছাড়ে না
কখনও ছাড়ে যদি; তো সহসা নিঃশেষ
তবুও নৈশব্দে প্রাণের ছাপ।


           এ এক অন্য অন্য রকম ঘ্রাণ
প্রকৃতির বিছানো দান,
পথে মাঠে ঘাটে
কত কুঁড়ি ফোঁটে?
ঝরে যায় কত ফুল পাতা?
এমনি বেড়ে উঠে শিশু প্রাণীকূলের
আবার মরে যায়!
এক কোন বিধান? চলছে অবিরাম
চেয়ে চেয়ে সময় যায় গড়িয়ে
যথা তথা;
এ এক অন্য অন্য রকম ঘ্রাণ


               মৃত্তিকা দহন
মৃত্তিকা দহন। সোদা মাটির স্বাদ। জীবের রং লাগা বসন। সব মিলিয়ে যায়। উবে যায়। জীবন বাড়ে, সাথে সাথে নিঃশেষ হওয়ার গান বাজে। জলের গান। ঝরনার গান। আকাশের ঐ নীলাভ গীত। সাগরের ঐ ঢেউয়ের গান। সোদা মাটির গন্ধ নেশায় টানে। আপ্লুত অহরহ। কালে কালে মৃত্তিকা পোড়া ছাপ। অন্ধকার গুহায় কালের পরম্পরায় সিদ্ধ হয়। অবিনাশি মৃত্তিকা দহন।


১৪২৩/১০, মাঘ/শীতকাল।