মৃত্তিকা সহোদর


বার বার মজার বিষয়,
সমুখে সবারই নিত্য সারা ফেলে নতুন বলে!
পুরাতন মোড়ক খুলে নতুনের আবাহন
সবাই আবিষ্ট নতুনের তরে।
ভুলে থাকে পুরাতনকে বলেই
যে পাতা ঝরে পড়ে! মোরা পাতাই তো তা
সেই কি নিঃস্ব পুরানো?
মূল্য তারই কেবল মৃত্তিকা সহোদর
তারই আপন সজ্জ্বন!
তা'হলে এই নতুন পুরাতন
এর মাঝে সময় কি বলে?
সময় কি হয়?
কিন্ত সময় তো মৃত্তিকা সহোদর হয় না! ও তো
এমনি এমনি নতুন পুরাতনে
সমস্বরে জেগে থাকে; না কি এমনি করে বাঁচে?
সময়ের মৃত্যু হয় কি কোন কালে?
তাই বলে, সময় কথা বলে।
=====


                বইয়ে যায় হাওয়া


বইয়ে যায় হাওয়া। কখনো উত্তর হতে। কখনো দক্ষিণা মুখী। আবার এলো মেলো ঘূর্ণি বায়ু। ভোরের আলোয় হাওয়া। জলের গায়ে শির শিরে ঢেউয়ের কাঁপন। এই বায়ু। দিক পরিবর্তন ক্ষণে ক্ষণে তার। ভোরের বায়ু মিলিয়ে যায়, দিনে। আবার দিন বাড়ার কালে ঠিক তার উল্টো হাওয়া। দুপরে প্রখর রোদে গরম হাওয়া। আর সাঁঝে মৃদমন্দ শীতল হাওয়া। আবার রাতের কালে নানা বৈভবে বায়ুর প্রবাহ এ যে নিত্য রিতি। বাতাসের ও, নতুন পুরাতন হয় নাকি? মৃত্তিকার সজ্জ্বন হয় না কখনো? তবে হাওয়ার সুখ দুঃখ অনুধাপনে প্রতিয়মান।
=====


            মৃত্তিকা সজ্জ্বনে গিট বাঁধে


পুরাতন বই বছরের যত্নে লালিত,
পাতায় পাতায় ছোঁয়ায়! যেন আত্মজা বুনে যায়
সময় পরম্পরায়।


নতুন বই সে তো গন্ধ ভারি,
পাতায় তার নতুন স্পর্শ! যেন নতুন স্বপ্নের গিট খুলে
আগামীর প্রত‌্যাশায়।


তাই লেখা আর লেখক আত্মজার জুড়ি,
একে অপরে সোদা মৃত্তিকার ঘ্রাণে! অবগাহন যত দিন বাঁচে
মৃত্তিকা সজ্জ্বনে গিট বাঁধে।
======


          মৃত্তিকা দহনে ডাকে


এই তো খেলা,
শিশু হতে বেড়ে উঠা, কিশোর যৌবন
প্রলুব্ধ বাসনায়, না না ঘ্রাণে অভ্যস্ত
বেঁচে থাকার অনিবার্য।


বৃদ্ধ খেলায় গড়িয়ে গড়িয়ে,
অভিধায় বিস্তর বিশাখায়, আনারি হতে প্রঙ্গা
যাপিত জীবন বৈভব, এক জীবনে সম্ভার
তার আশা নিরশার বর্ধন।


কিন্ত এই যে নিত্য খেলা,
বিভ্রমে আঁটে সারা বেলা, ভুলে যায় সময় কাল বেলা
আচ্ছাদনে ঢাকা মেঘের ছাতা, বৃষ্টি ঝরে সবই ফাঁকা
মৃত্তিকা দহনে ডাকে সারা বেলা।
======


      মাটির ধুলো উড়ে


মাটির ধুলো উড়ে, হাওয়ায়
শন শন করে, অম্লবদনে।
চেতনার দেখভাল করে, অজানায়
তার কে কিবা খবর? ভুলে যায় আনমনে।
চপল চঞ্চলা সময় ক্ষেপ, ক্ষয়ে ক্ষয়ে
আনমনে রাতঘোর, বিলাপে কাঁদে।


ডুবতে হবে বলে সুর্য উঠে, পাহারায়
মেখো মেখো করে জোছনা হাসে, সর্বনাশে।
বিলায় সময় ছায়া ছায়া, চেতনার কিন্নর
নুপুর বাজায় পাতার বাঁশি, মৃত্তিকা সর্বনাশি।
=====


       শুনেছো কি কেউ?


শুনেছো কি কেউ?
কান্না তার হাসির আঁড়ে চুপি চুপি
জলের ঢেউয়ের মতো;
স্পর্শকাতর!


ফেনিল ঢেউ তীরে আছড়ে পরে
নুড়ি পাথরে স্পর্শ খুঁজে
কালের দহনে মুক্তা জুড়ে!
এ কোন স্পর্শ ঘ্রাণ
জলের ঢেউয়ে সাঁতার কাটে
আমিত্ব চায় না মোটে,
হারানো সঙহারে ব্যতি ব্রত;
======


এত এত প্রশ্ন ব্রত!


এত এত প্রশ্ন ব্রত! অস্তিত্বে কি মিশে নিত্য। না কি হাওয়ায় মিলায়? না কি ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায়? নিঃশেষ, অতি চুঁয়ে চুঁয়ে।
প্রাণীর রক্ত ক্ষরণ ক্ষতে। সময় কাল ক্ষণ গুনে গুনে ভুলে যায় বারং বার। আত্মজা মায়া। টান ধরেছে কায়ার। কেমনে ফিরবে তাহা। জাগিবে কি তা প্রশ্ন ব্রতে? নিত্য সোদা গন্ধ ভরে।
=======


         কি তব দায় অম্ল শ্বাসে?


         কি তব দায় অম্ল শ্বাসে?
আত্মজা ধেনু সবুজ মাঠে নিত্য আলোয় গুজরায় খেয়ালে
যদি এমন হয় দিন নাহি আর আসে?
         তবে কি হবে এবার?
এত এত সম্ভার আমিত্তের থরে থরে মেঘ মালা মতো করে
যদি তা সবই যায় ক্ষণিকে মিলায়ে!


         মৃত্তিকার পরতে পরতে
কত যে ইতিহাস লুকায়ে? অনিবার্য তা ছিল দামি কোন কালের
এখন তা মৃত্তিকা সমিপে।
         আপন গুহায় মুখ লুকায়ে সোদা মাটির
ঘ্রাণে আপ্লুত নেশায় কাতর অহনিশি মৃত্তিকা যামিনি
কালের গর্ভে ঐ তো সুলোভ স্বাক্ষী।
====


ধুলোয় ভরা পথের বাড়ি


ধুলোয় ভরা পথের বাড়ি
সময়ের বাড়ী কোথায়?
হাওয়ার ঘর চলা চলে
শ্বাসে যায় দেখা।


আঁকা বাঁকা পথের চিহ্ন
কালের নাকো দ্যাখা?
গুহার গায়ে চিহ্ন আকা
জীবাশ্ম বলে কথা।


দিক ভুলে যায় হাওয়ার গান
হেতায় সেতায় বাজে
কইতে গেলে কত কথা
ইতিহাস মনে রাখে।
=====


আমিত্ব গাঁথা মৃত্তিকার শরীর জুড়ে


আমিত্ব গাঁথা মৃত্তিকার শরীর জুড়ে। সবুজ শ্যামল পৃথিবী। রঙে রাঙা ঝলমলে প্রকৃতি অনুসঙ্গ। কোজাগরি চাঁদ হাসে নক্ষত্রপুঞ্জে। কি শুণ্যতা কি অবরহি? অন্তিম ক্ষণ কোলে। শুধুই শূণ্যতা ভরে বাঁচে। এ কোন কাল? এ কোন সময়? এ কোন মৃত্তিকা?
=====


১৪২৩/১৩, মাঘ/শীতকাল।