[দূর পাহাড়ের দেশে]


মেঘেদের ছুটোছুটি
পাহাড়ের এপার থেকে ওপারে
কোল বেয়ে গা-ঘেঁষাঘেঁষি করে,
কখনও গায়ে গায়ে ধাক্কাধাক্কি
কখনও বা হাত ধরাধরি করে
খেলায় মাতে ওরা।


আমি তন্ময় হয়ে দেখি
ওদের লুকোচুরি আর ছুটোছুটি,
দিনভর এমনিকরেই চলে খেলা।
হঠাৎই একদল বৃষ্টি ভেজা মেঘ
ছুটে আসে একপশলা বৃষ্টি নিয়ে
ফিরে যায় অন্য ঠিকানায়।


অন্যদিক থেকে ঘন সাদা মেঘের দল
ছুটে আসে উন্মুক্ত দুয়ার প্রান্তে—
লুটোপুটি খায় বৃষ্টি ধোয়া আঙিনায়।
খোলা জানালায় ঘরে ঢুকে
কানে কানে বলে যায়
"ও ভিনদেশী মেঘবালিকা
মেঘ ঢাকা দূর পাহাড়ের দেশে
রইল তোমায় সাদর নিমন্ত্রণ।"


কথা শেষ করে ফিরে যায় ওরা
দূর পাহাড়ের দেশে,
ওদেরই চলে যাওয়া পথে
উঁকি দেয় ঘন সবুজ বনানী
কখনও বা তুষারাবৃত কাঞ্চনজঙ্ঘা।


সূর্যের আলোয় ঝলমল করে ওঠে
তুষারের চাদরে মোড়া পর্বতশ্রেণী,
দূর থেকে ডাক দেয় মনের গভীরে
অদ্ভুত এক প্রশান্তির সাড়া পাই
অপার বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকি
দূরের ওই পর্বতমালার দিকে।


ওদিকে মেঘের দল খেলতে খেলতে
পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নেমে যায়
নীচের ওই ছোট পাহাড়ি গ্রামে
যেখানে ছোট ছোট পাহাড়ি ঝর্ণা
তির তির করে ঢাল বেয়ে নেমে
পাহাড়ের গোটা শরীর ভিজিয়ে
পদতল স্পর্শ করতে চায়।


হাত ধরাধরি করে দাঁড়িয়ে থাকা
দূরের ওই পর্বতমালার মধ্যে থেকে
তাদের মধ্য মণি কাঞ্চনজঙ্ঘা
হাতনাড়া দিয়ে বলে "ও বালিকা,
আবার দেখা হবে পরে—
এখন মেঘেদের সাথে খেলা
ওই দেখো আসছে ওরা সদলবলে।"


এক লহমায় মেঘের দল ঘিরে ধরে
দূরের ওই পর্বতমালাকে—
নতুন এক খেলায় মেতে ওঠে ওরা।


[লুংথাং/চামরাইল, ১৮ই অক্টোবর ২০১৯]
©চিন্ময়