[তুমি বসন্ত]


তোমারই অপেক্ষায় বসে আছি আমি
দুয়ারে অপেক্ষমাণ মানস রথ,
যে রথে চড়ে পৌঁছে যাবো
তোমার কাছে,
দেখা হবে তোমার সাথে,
উদগ্রীব আগ্রহে তাই তোমারই প্রতীক্ষা।


তুমি বসন্ত,
ছুঁয়ে যাবে আমায়।


বাইরের আকাশে অবসন্ন ক্লান্ত দেহে
অংশুমালীর ঘরে ফেরার পালা,
জানালায় হাতছানি দেয়
পড়ন্ত বিকেলের লজ্জারাঙা মুখ,
মানস রথে ভ্রমণের ডাক পাই —
উঁকি দিই জানালায়।


বাঁকা একফালি রোদ ছুঁয়ে যায় আমায়,
ঝুঁকে থাকা মুখে রক্তিম আভা ছড়িয়ে
বিলীন হয় সমস্ত সত্তার মাঝে।


দেহ মনে মখমলের পরশ বুলিয়ে দেয়
একমুঠো হিমেল বাতাস।
শেষবারের মতো জানিয়ে যায়
তার উপস্থিতির কথা।
ফিসফিসিয়ে বলে কানে
এবার এসেছে তার বিদায়ের পালা
আরও একটা বছরের ছুটি।


পলাশের পাপড়িতে এ গাছে ও গাছে
আরক্ত লাল রঙের মাখামাখি।
দিগন্ত পারে শেষবারের মতো
উঁকি দিয়ে যায় অংশুমালী,
বিশ্রাম তার আরও একটা রাতের —
গোধূলির আলোয় চরাচর ঢাকে
রক্তিম আলোর চাদরে।


ভুবন মেতে ওঠে রঙের খেলায়
আশ্চর্য এক রং দেয়া-নেয়া চলে
আকাশ থেকে পলাশে
পলাশ থেকে তটিনীর তরঙ্গে
তরঙ্গ থেকে আবার ওই আকাশে।
বসন্ত এসে গেছে,
জাগ্রত আজ দ্বারে।


দিক্চক্রবালে ধীরে নামে
আঁধারের কালো ছায়া,
শুষে নেয় গোধূলির সব রং,
উচ্ছল তটিনীর অশান্ত ঊর্মিমালা
মুখ লুকায় আঁধারের কোলে,


তুমি বসন্ত,
এসেছো আমার বিজন ঘরে।


[দুবাই, ৪ঠা মার্চ, ২০১৭]
©চিন্ময়