মুক্ত  আকাশ পেতে চায় খাঁচার পাখির‌ও মন
অথচ আমার ভেতরটা আসছিল ভেঙে,
যত‌ই ঘনিয়ে আসছিল মুক্তির ক্ষণ!


হয়তো সকলে পাগলের প্রলাপ ভেবে
ছুঁড়ে ফেলবে এ সত্য বুলি,
জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় ছিল আমার-
বন্দি-জিম্মিদশার সেই দিনগুলি।


কখনো কখনো স্বাধীনতাও সুখের নয়
পরাধীনতাও যে এমন মধুর হয় !
তোমাদের ভদ্রতা,সভ্যতা,আতিথেয়তায় এ আমার প্রথম অভিজ্ঞতা।
মুক্তির জন্য এতটুকুও ব্যাকুলতা হৃদয় করেনি গ্রাস
যুগের পর যুগ,সহস্র বছর ঐ টানেলের ভিতর বসবাস
আমার মনে কোনদিন পেত না আশ্রয় এক ফোঁটা তিক্ততা।


হে বিশ্ববাসী,তোমরা যাদের সন্ত্রাসী বলো!
যাদের নিধনে সমস্ত অমানুষ এক হয়ে চলো!
আমার দেখা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পুরুষ ঐ সকল মুখ ঢাকা যুবক
সতত করি প্রার্থনা ওদের কল্যাণ হোক
যাদের অন্তর সদা দগ্ধ করে আখিরাতের ভয়
বাঘের ডেরায় হরিণ পেয়েও যারা সংযত রয়
কি করে সেই সব মহাবীর বলো সন্ত্রাসী হয়?


নয় কো তোমাদের নৃশংসতার ডরে
ওদের ইচ্ছেতেই মুক্ত হয়ে আজ ফিরেছি ঘরে।
জানি না কী করে নিজের অগোচরে
ঐ ধ্বংসস্তুপের তলে রেখে এসেছি মন
অল্প ক'টা দিনেই চির শত্রু হয়ে গেছে প্রিয়জন!


নিরাপত্তার দেখভালে সেবা-শুশ্রূষার সে পৌরুষদীপ্ত হাত
আমাকে আজ দেয় না ঘুমোতে,সে স্মৃতি ভেবেই যায় কেটে রাত
নিয়ত আরো প্রেম-তৃষা বাড়ায় এক অতৃপ্ত সুখ
এত অনুনয়-বিনয়েও না দেখতে পেলাম ঐ বীর মুখ !


তোমার সুমধুর কণ্ঠধ্বণী আজি সুর হয়ে বাজে
মহান রবের জন্য‌ই এই রণসাজে
পবিত্র প্রিয় জন্মভূমি আর আল -আকসা রক্ষার দায়
আমাদের জীবন-যৌবন সব‌ই দিয়েছি সপে
মায়া তুমি ক্ষমা করো আমায় ।


ব্যর্থ হবে না তোমাদের সংগ্রাম
হামাস মানেই এক বীরত্বের নাম
সত্যের যুদ্ধে মিথ্যে চিরতরে হয়ে যাবে লীন
দেখবো খুব অচিরেই মুক্ত-স্বাধীন ফিলিস্তিন।


হয়তো তোমায় পাবো না খুঁজে
মিলন-বিরহ ব্যথায় কাঁদবো মুখ গুঁজে
একাকী পুড়বো আমিই কেবল নিশি-দিন--
জিম্মিদশার সেই সুখময় স্মৃতি
হৃদয় থেকে কখনো হবে না ইতি
চিরকাল তোমার অপেক্ষায় রবো হে প্রিয়তম বীর মুজাহিদীন।


(হামাসের জিম্মিদশা থেকে সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ইসরাইলী তরুণী মায়ার সত্য কাহিনী অবলম্বনে রচিত)