নৃশংস, বর্বর, নারকীয়তা করে পার
  জালিম পাকসেনাদের মানিয়ে হার
দীর্ঘ নয় মাসের সংঘর্ষী রক্তক্ষরণে
বাঙালি জাতির হাতে যে দিল এনে
লাল সবুজের পতাকা, বদ্বীপ মানচিত্র আর
              মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার অধিকার,
   সে আমার এক জীবনের চাওয়া পাওয়ার
যেন তৃষ্ণার্ত প্রেমিকের কাঙ্ক্ষিত  বাসর ঘর
ষোলোই ডিসেম্বর, ষোলোই ডিসেম্বর, ষোলোই ডিসেম্বর।


             ষোলোই ডিসেম্বর, তুমি -
লাখো শহীদের রক্তমাখা কৃষ্ণচূড়া
  বীরাঙ্গনা মায়ের সুরভি হারা ধুতুরা
আগুনে ঝলসে লাল হওয়া রক্তিম জবা
লাখো শহীদের ত্যাগে কেনা রক্তিম সরোবর
ষোলোই ডিসেম্বর। ষোলোই ডিসেম্বর। ষোলোই ডিসেম্বর।


                ষোলোই ডিসেম্বর তুমি -
বীভৎস লাশের স্মৃতি বয়ে বেড়ানো
স্বামী হারা বিধবা মায়ের ক্ষত-বিক্ষত
             শোকার্ত মনে সান্ত্বনা পুরস্কার,
কালবৈশাখী দিনের প্রচণ্ড ঝড় - ঝঞ্ঝার পর
  সোনালী রৌদ্র ছড়িয়ে সূর্য ওঠা মুক্ত অম্বর
ষোলোই ডিসেম্বর। ষোলোই ডিসেম্বর। ষোলোই ডিসেম্বর।


                  ষোলোই ডিসেম্বর তুমি-
    এদেশের কিছু নিমকহারাম পশ্চিমা দোসর
ঘৃণিত রাজাকার, আলবদরের কাছে ত্রাস,
আবার, মুক্তিকামী বীর জনতা ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আপোষহীন ত্যাগে পাওয়া
বীর উত্তম, বীর বিক্রম, বীর প্রতীক,
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও খেতাব না পাওয়া
সাধারণ মানুষের বিজয় উল্লাস,
বিশ্ব মানচিত্রে সাহসী বাঙালি জাতিকে
         পরিচয় করিয়ে দেবার অঙ্গীকার,
ষোলোই ডিসেম্বর। ষোলোই ডিসেম্বর। ষোলোই ডিসেম্বর।


                  ষোলোই ডিসেম্বর তুমি -
জাতির ক্রান্তি লগনে,দেশের মায়ায় মোহিত করে
ঐক্যবদ্ধ, ত্যাগী দেশপ্রেমিক বীর সেনা হিসেবে
ভবিষ্যত প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করতে
দৃষ্টান্ত হয়ে থাকা ইতিহাসের চিরকুট
চিরপ্রত্যাশিত স্বাধীনতার বিজয় মুকুট।
যতদিন রবে বাঙালির নিজস্ব ঠিকানা
   পদ্মা, মেঘনা,ব্রহ্মপুত্র, সুরমা, যমুনা
ততদিন তোমায় আমরা কেহ ভুলবোনা ।


             এ জীবনে আসবে যতবার -
শ্রদ্ধাবনত শিরে, বুকে স্বাধীনতার চেতনা ভরে
সুখী সমৃদ্ধ উন্নত স্বদেশ বিনির্মাণের দীপ্ত শপথ নিয়ে
বিজয় মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলবো ততবার -
তুমি আমার প্রেম, প্রেয়সী বাংলার অহংকার
ষোলোই ডিসেম্বর। ষোলোই ডিসেম্বর। হে ষোলোই ডিসেম্বর।