মাগো তোমায় যখন জিজ্ঞেস করি
দাও আমায় বাবার পরিচয়,
আঁচল দিয়ে মুখখানি ঢেকে কাঁদো শুধু
কেন তোমার এতো ভয় ।
বাবা বলে অনেক ডাকতে ইচ্ছে করে
আমিও চাই বাবার ভালোবাসা,
জন্মের পরে কখনো বাবাকে দেখেনি
তাইতো মনে লাগে বড় ব্যথা।
সোহাগ করে রেখেছো নামটি স্বাধীন
পরে থাক বিধবার শাড়ি,
তোমার  মাথার সিঁদুতে নাই সিঁদুর
হাতে নাই একটিও চুড়ি,
বুক-ফাঁটা আর্তনাদ করে বলে ওঠো
পারব না বেটা তোকে বলতে,
সমাজের চোখে কলঙ্কিত নারী আমি
শুনে পারবি না সহ্য করতে।
স্বাধীনতা যুদ্ধে পশ্চিম মিলিটারিরা হায়রে
তোর বাবাকে করে গুলি,
জোর জুলুম করে আমাকে টেনে-হেচড়ে
বাড়ি থেকে নিয়ে যায় তুলি ।
ওদের ক্যাম্পে রেখে আমায় নির্যাতন করে
নির্দয় ভাবে দিন-রাত ধরি,
গর্ভে আমার সন্তানের উদয় হলে ওরা
কলঙ্কিনী বানিয়ে দেয় ছাড়ি ।
জন্মের পরে তাই নামটি রেখেছি স্বাধীন
ভালবাসা,আদর যত্ন দিয়ে,
পিতৃ- পরিচয় দিতে পারব না বলে তাকে
আশ্রমে রেখেছি বুঝবি বড় হয়ে।
স্বাধীন তখন চিৎকার করে বলে, মাগো
আমি স্বাধীন দেশের সন্তান,
তুমি আমার গর্ব আমার অহংকার তুমি
তুমি কলঙ্কিনী নাও তুমি মহান,
বিজয়ী বাংলার মাটিতে মাগো
তুমি চির-অম্লান।