আঙিনায় বিছানো পাটি, সকালের কাঁচা রোদ,
মাফলার শোয়েটার, ছড়ানো ছিটানো বই,
বাটিতে গুড় মুড়ি আর ভনভনানো মাছিদের কোরাস, স্কুল ছুটির নির্ভার আনন্দে মন্থিত শৈশব ছিল আমাদের।
গাছ থেকে খসে পড়া কচি কলমি বরই আর বরই ফুলের ঘ্রাণে মিশে থাকা নতুন বইয়ের সৌরভ ছিল মোহনীয় জাদুবাস্তবতার মতোই।
কাকতাড়ুয়া, গমের খেত, পাখি হাঁকানো চিৎকার, আগুন পোহানো আর শিশির ভেজা দূর্বাঘাসের আঁকাবাঁকা আলপথে পদচিহ্ন আঁকা শৈশব।
আমাদের শীতের শৈশব, নামতা মুখস্থের গুনগুনানি
স্কুল শিক্ষকের ব্যঙ্গ ভঙ্গিমার কোন উক্তিতে মিশে আছে,
মিশে আছে বিস্মৃতিতে এবং দিঘির শুকোতে থাকা জলে।
ইঁদুরের গর্তে পুঞ্জিভূত চকচকে ধান সংগ্রহের আনন্দে
মায়ের স্নেহমাখা পিঠাপুলির ম ম গন্ধে!
স্কুল ছুটির আনন্দ শেষ হতে না হতেই ফলাফল আসে বার্ষিকের, উত্তুরে হাওয়ার বাড়ে আরো বাড়ে শীতের প্রকোপ,
সর্দি কাশির মতই শীতের ছুটিও হুট করে শেষ হয় একদিন।
ছেড়ে যেতে হয় আপন আলয়, মা, মাটি আর শুকোতে থাকা পুকুরের ঘন হয়ে আসা মাছেদের। এখন অনেক বছর পর ঘর ছাড়া আমাদের মন আরবান আকাশের স্মৃতিকাতরতায় আক্রান্ত কেন যেন বারবার।