গভীর রাতের আকাশ যখন তারাহীন, নিথর,
ভেবো না প্রভাত আসবে না আর পৃথিবীর ওপর।
মরুর বুকে তৃষ্ণার্ত যত হাহাকার আছে,
বৃষ্টি হয়ে এক দিন ঠিকই ঝরবে তারই কাছে।
মনের কোণে জমে থাকা কালবৈশাখী ঝড়,
ভেঙেচুরে দিয়ে যায় যত স্বপ্নেরই ঘর।
তবু সেই ভাঙা স্তূপেই প্রাণের অঙ্কুর জাগে,
নতুন করে বাঁচার আশা হৃদয়েতে লাগে।
জেনে রেখো, আঁধারেরও আছে এক নিজস্ব সীমা,
তাকে পেরিয়েই জ্বলে ওঠে ভোরের অরুণিমা।
দুঃখের নদী যত গভীরই হোক তার তল,
একদিন ঠিকই ভেসে ওঠে সুখের শতদল।
প্রলয় শেষে ভাঙা মন্দিরে কাঁপে শেষ প্রদীপ শিখা,
আকাশ জুড়ে শুধু জমাট বাঁধা ঘন কালো যবনিকা।
পথের শেষে অথৈ সাগর, কূল কিনারা নেই,
ভাবছো বুঝি এখানেই শেষ, আর কোনো আশা নেই।
কিন্তু শোনো, এই তো নিয়ম, এই তো মহাকাল,
রাতের পরেই জন্ম নেয় নতুন এক সকাল।
শুকনো পাতার মর্মরেও বাজে নতুন সুর,
শীতের পরেই বসন্ত আনে আনন্দ মধুর।
কঠিন পাথর ভেদ করেও তো অঙ্কুরেরা ছোটে,
পোড়া মাটির বুকেও তো নতুন ফুল ফোটে।
বুকের গহীনে পুষে রাখো এক জোনাকি বিশ্বাস,
মুছে দেবে জীবনের সকল দীর্ঘশ্বাস।
চোখের নোনা জল শুকিয়ে হবে মেঘনা-পদ্মা-যমুনা,
সেই নদীরই তীরে পাবে সুখের এক নতুন ঠিকানা।
তাই, অশ্রু মুছে, বুকে শুধু আশাটুকু রাখো,
জীবনের দেওয়ালে নতুন ছবি আবার আঁকো।
দুঃখের পরে সুখ আসে, আঁধারের পরে আলো,
শুধু বিশ্বাসে চেয়ে দেখো, সব হবে ভালো।