চাঁদের মৃত আলোয়, ধ্বংসের প্রান্তরে,
মাটির সাথে মিসে ছিল কঙ্কাল, সময়ের তপ্ত গহ্বরে।
পায়ে ধুলো, চোখে মরীচিকা, এল এক মুসাফির,
পিঠে তার ব্যথার পাথর, মুখে বিস্ময়ের ছায়া বীর।
নীরব নিরালায় চারদিকে মৃতদের ভূমি
সেথায় পড়ে আছে শুধু শত কঙ্কাল নিরবধি।
কঙ্কাল যেন ডাকিয়া কহে ওহে আগন্তুক,
দাঁড়াও নিমেষ তরে  কহি কিছু শোক।"
একদিন আমিও ছিলাম, তোমারই মতন প্রাণ,
এই পথের ধুলো মাখা, ছিল আমারও অভিমান।"
চেয়ে দেখো এই শূন্যতা, কালের নির্মম পরিহাস,
সব রূপ রস কেড়ে নিয়ে, এঁকেছে শুধু দীর্ঘশ্বাস
তোমার চলার পথেও, আঁধার ঘনিয়ে আসবে ধীরে,
আমার মতো সব স্পন্দন, স্তব্ধ হবে অচিরে।"
এককালে আমিও ছিলাম, জীবনের কলরবে মাতি,
এই পথের ধুলোবালি, ছুঁয়ে যেত দিবা রাতি।"
"চেয়ে দেখো এই শূন্যতা, কালের কঠিন আলিঙ্গন,
সব চাওয়া পাওয়া শেষে, শুধু নীরব ক্রন্দন।
"সাবধানী পদক্ষেপ রাখো, ধরো সংযমের লাগাম,
অহংকারের বৃথা বোঝা, টেনে নিয়ো না অবিরাম।
আমিও তো ছিলাম মানুষ, কত রূপ কত বেশ,
আজ শুধু পড়ে আছি, কালের নীরব অবশেষ।"
মুসাফির থমকে দাঁড়ায়, শুনে হাড়ের মিনতি,
নতুন পথের বাঁকে খোঁজে জীবনের পরিণতি।
কবরের নীরবতা যেন, এক গভীর বাণী কয়,
"ক্ষণিকের এই জীবন, বৃথা ভেবো না নিশ্চয়।"
মুসাফির চুপচাপ বসে, রাখল তার ঝোলা পাশে,
দুজনেই নীরবে জ্বলল, এক অনন্ত প্রশ্নের আশে।
একজন বয়ে আনছে ভবিষ্যৎ, অন্যজন অতীতের কাঁদা,
তাদের মাঝখানে দাঁড়িয়ে ছিল নীরবতা, শব্দহীন ফাঁদা।
"তবে কি আমিও হব এমন?" জিজ্ঞাসা করল সে,
কঙ্কাল বলল, "সব হবে ধুলো, রবে শুধু যা সত্য ও স্পর্শে।
ভালবাসা, ভয়, আর আল্লাহর দিকে হাঁটা পায়ে—
এসবই কেবল অমর, যা ছিল আল্লাহর রাহে।