মেঘবালিকা ও মৃত্য উপত্যকা

মেঘবালিকা ও মৃত্য উপত্যকা
কবি
প্রকাশনী বার্তা প্রকাশন
প্রচ্ছদ শিল্পী সন্তু কর্মকার
স্বত্ব লেখক
প্রথম প্রকাশ ফেব্রুয়ারি ২০২০
সর্বশেষ সংস্করণ ২০০ কপি
বিক্রয় মূল্য ৯০ টাকা
বইটি কিনতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা

একমুঠো আলোর গল্প , দুরন্ত হাওয়ায় বসন্তের প্রেমের গল্প , কিংবা ঝড়ো বাতাসে হৃদয় ভাঙ্গার গল্প হয়তো অনেকটা সহজ। কিন্তু সীমান্তে দাঁড়িয়ে খাদের গভীর অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে , আলো খুঁজে নকশা বোনাটা সত্যিই ভীষণ কঠিন। আর এখানেই ব্যতিক্রমী লেখনীর দাগ আর চার পাঁচ জনের থেকে নিজেকে আলাদা করে নিতে সক্ষম।দৃশ্যত প্রথমেই নজর কাড়ে নামকরণের ধরণ , সাদামাটা অথচ গভীরতায় ভরপুর। #মেঘবালিকা_ও_মৃত্যু_উপত্যকা। অন্ধকার জীবন সমাজের বুকে আলোর নকশা নিয়ে কারিকুরি করা , তরুণ কবি #সারাফাত_হোসেনের প্রথম একক কাব্যগ্রন্থ।

"ওদের কিন্তু ঠিক মানুষের মতোই দেখতে "

ইট কংক্রিট রড সিমেন্ট ঘেরা নাগরিক জীবন ভীষণভাবেই যন্ত্রসম।মানুষ মুখের মুখোশের আড়ালে হিংস্র জানোয়ার কখনও নারীকে ভোগ্যপণ্য করে ,কখনো বা উন্মক্ত পশুর মতো প্রকাশ্য দিবালোকে তাণ্ডব চালায়। কোথাও বা সামাজিক আচারের নামে নাবালিকার স্বপ্নখন্ডন করা হয় ; দীর্ঘদিনের কাছের মানুষ এক লহমায় ভালোমানুষীর মুখোশ ছিঁড়ে ফেলে।

ব্যতিক্রমী কলম নারী হয়ে চিৎকার করে ওঠে ,,,,,,
"তোমার যদি অন্য কারো সাথে সংসার করার স্বাধীনতা থাকে ,
তাহলে আমার কী নেই ;
মরে যাওয়ার স্বাধীনতা ? "

নাহ ,,,,,,,
এই সমাজ , এই সংসার , এই বিষাক্ত জীবনে নারীদের মরারও স্বাধীনতা নেই , নেই স্বাধীনতা নিজের মতো করে বাঁচার, সুযোগ দেওয়া হয়না প্রতিবাদের। প্রতি ক্ষেত্রেই হয় মানিয়ে নেবার দোহাই , না হয় নষ্টা চরিত্রের উপাখ্যানে ভূষিত।

অন্ধকার মৃত্যু উপত্যকার প্রতিটি দেওয়ালে ঠোক্কর খেয়ে প্রতিধ্বনিত হয় কবির আগুন ঝরানো কলমে। নারী ও সমাজের অন্ধকার দিক ঘিরে,,,,,
#স্বাধীনতা , #ভয় , #মানিয়ে_নিতে_হয় , #সার্কাস , #এমনটাই_হয় , #মেহেরুণ্ণেসা.#নাভির_নিচে এমন আরও কয়েকটি কবিতা মৃত্যু উপত্যকার সার্থকতা বহন করে।

জ্বালাময়ী সমাজচিত্রের আর এক বিপরীত কোমল দিক "ভালোবাসা "।তরুণ কবি এখানেও কলমের নিপুণতা বহন করে গেছেন।

ভালোবাসায় এখনও ধর্মের নামে বলি হয়। ভালোবাসা হারিয়ে দেশ সমাজ আজ হিংসা দ্বেষ হানাহানির মুখোমুখি।
ভালোবাসতে বাসতে প্রেমিকের জন্য অপেক্ষারত প্রেমিকার আকুল আকুতি,,,,, কবির ব্যতিক্রমী লেখনীর ধারালো আঁচড়ে ধরা পড়ে ।লেখনীর প্রকাশে কখনো প্রেমিকার হৃদয় ভঙ্গ , কখনো বা কৃতজ্ঞতার বিনিময়ে স্বেচ্ছা ধর্ষন , কখনো প্রথম ভালোবাসার সুর। কোথাও স্বামী ফেরার অপেক্ষায় খালি পেটে ঘুমিয়ে পড়া বাড়ীর বৌ অসহায়তা।কোথাও আবার লেখনীর ধ্বজা' ই জ্বল জ্বল করে,,,,,,যৌনতার লালসা নয় , পরকীয়া মানে একান্ত মননের ভালোবাসার অনুভূতিও হয়। তাই কবি কণ্ঠ অনায়াসেই সোচ্চার হয়ে বলে ওঠে,,,,,,,
"না পাওয়াটা ই ভালোবাসা। "
কবির কলম চালনায় মেঘবালিকা থেকে নারী হওয়ার তাত্পর্য এখানেই লুকিয়ে।
#অন্য_ভালোবাসা , #সে_প্রেমে_পড়েছে , #না_পাওয়াটাই_ভালোবাসা , #তোমার_প্রেমিক_আসেনি কিংবা
#দ্রুত_গতিতে_কমে_আসছে_ভালোবাসা ,,,,,,,,;,,মেঘবালিকা থেকে নারী হয়ে ওঠার পথটা কবি সুনিপুণভাবে তুলে ধরেছেন।

সমাজ , নারী , পরিজন , পরিস্থিতি অন্ধকার দিক বাদ দিয়েও তরুণ কবি কখনো নিজেকে ব্যক্ত করেছেন বাবার নিরাশ্রয়হীন সন্তান হিসাবে , কখনও এক অসহায় বালিকার প্রতিচ্ছবি হয়ে ,বা আলোর রোশনায়ে মাতোয়ারা ফুটপাথের খুদে সদস্য হয়ে, কিংবা সহায় সম্বলহীন বৃদ্ধার আকুল আকুতি হয়ে। প্রতিটা চরিত্র কবি অতি যত্ন সহকারে উপস্থাপন করেছেন।

কবির জোরালো লেখনী যখন বলে ওঠে ,,,,,,,,

"মাথার উপর ছাদটা ক্রমশ আলগা হতে থাকলে বাবার কথা মনে পড়ে।
কিভাবে বট গাছের মত আগলে রাখতেন তিনি। "

কিংবা বৃদ্ধার পরম আকুতি ,,,,,,,
"এখনো দাঁড়িয়ে কেন নিশিকেশ ?
বসো .....!
বসো একটু গল্প করি । "
কোথাও যেন লেখনীর মাত্রা বুকের হৃদযন্ত্রকে এফোঁড় ওফোঁড় করে দেয়। এখানেই তরুণ কবির জয় জয়কার।

উৎসর্গ

যে মানুষটা গাছ হয়ে সারাজীবন ছায়া দিয়ে গেছে; বাবাকে।