আমাকে ক্ষমা কোরো মা -
আমি পারলাম না , তোমার স্বপ্ন গুলো পূরণ করতে।
তোমার স্বপ্ন ছিল আমি যেন বাবার মতো সুন্দর
সূবর্ণকান্তি হই। আমি হতে পারিনি।
আমি যে তোমার মতো হয়েছি মা। তোমার মত ভালোবাসতে পারি।
পুরো গোটা একটা পৃথিবী তুমি আমায় দিয়েছো।
বুকের অমৃত সুধা আমার শরীরে দিয়েছ।
কত অমূল্য সময় তুমি আমাকে বিলিয়ে দিয়েছ।
আমি যখন দুধের শিশু, কত রাত্রি তুমি জেগে।
কতবার আমি তোমার গায়ে কাপড় ভিজিয়েছি
তাও যাওনি রেগে।
ছোট মাসির বিয়েতে, সকলে কত আনন্দ করেছে তুমি পারোনি।  
আমি যে শিশু, তোমার উষ্ণতা ছাড়া যে আমি ভীত।
কত চিন্তা তোমাকে পীড়িত করছে।
কবে আমি স্কুলে যাবো
কোন স্কুলে ভর্তি হবো,
স্কুলটা ভালো কিনা?
সকালের টিফিনটা খেলাম কিনা?
শরীরটায় তাপমাত্রা ঠিক আছে কিনা?
কত অমূল্য শিক্ষা পথে ঘাটে আমাকে দিয়েছ।
স্কুলের বন্ধুর থেকে তুমিই তো ছিলে আমার প্রিয় বন্ধু।
তবু আমি পারিনি তোমার স্বপ্ন গুলো পূরণ করতে।
গত বাইশটা বসন্ত তুমি আমাকে গোছাতে শেষ করলে।
আমার একটা সুন্দর বৌ হোক।
কিন্তু আমি প্রেমে পড়েছি,
ভালোবাসার জোয়ারে নিজেকে ভাসিয়ে
তোমাকে বহু দূরে ফেলে এসেছি।
তুমি কোন প্রতিবাদ করো নি।
তোমার ভালোবাসার বাইশ বছর,
আমাকে তোমার কাছে রাখতে পারে নি মা।
একটা বছরের প্রেম, হারিয়ে দিল বাইশটা বছর।
আমি হারিয়ে যাচ্ছি মা।
নীল ঘুম আমাকে ডাকছে।
ঐ দশতলার কার্নিশ থেকে।
তোমার সব স্বপ্ন গুলো গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে গেল মা। পূরণ করতে পারলাম না।
ভালোবাসা হারাতে হারাতে আমি ক্লান্ত পরিশ্রান্ত।
জীবনের স্রোত ঠেলে ঠেলে অনন্ত স্রোতে।
ঐ দেখো টাল মাটাল নৌকাটায় ঝড় লেগেছে।
ঘুমঘোর চাঁদ ডাকছে আমায়,একটু ঘুমাতে চাই।
আত্মীয় পরিজন বাবা আর তুমি।
তোমাদের ভালোবাসা।
সব ওই মেয়েটার কাছে হেরে গেল আজ।
রক্তের ভিতরে জাগরন প্রেমপীড়ার ঘুম।
দুচোখ ভরে তোমার স্বপ্ন গুলো চুরি করে চলে যাচ্ছি মা।
ওই দশতলার কার্নিশে দাঁড়িয়ে আমার নিয়তি।
আমি যে তোমার মতোই ভালোবাসতে পারি,
জীবনের শেষদিনেও।
কিন্তু সে যে বুঝলো না।।