বন্ধু তুই কোথায় গেলি?
ভুলে গেলি?
সেই স্কুলে আগে এসে ব্যাগ দিয়ে
প্রথম বেঞ্চে বসার জায়গা রাখতিস।
বসতে দিতিস না কাউকে।
মনে পড়ে?
সেই যে আমি হোমওয়ার্ক করে আনি নি বলে স্যারকে বলতিস
"স্যার.. ভুলে খাতা বাড়িতে  ফেলে এসেছি..!"
হাসিমুখে একসাথে ক্লাসের বাইরে কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকতাম।
ভুলে গেলি নীলডাউনে হাঁটুতে লাগবে বলে তোর রুমালটা দিতিস।
ছোটবেলায় মায়ের লক্ষ্মী ভান্ডার ভেঙে সার্কাস দেখতে যাওয়া-
তারপর নিজের ঘাড়ে নিয়ে মামার হাতে মার -ভুলে গেলি?
আমি টিফিন না আনলে -
টিফিনের সময় নিজের টিফিন বক্স খুলে
সেটা নিয়ে দুই বন্ধুতে ভাগ করে খেতাম।
ভুলে গেলি?
পরীক্ষার আগের রাতে ল্যান্ড ফোনে ফোন করে বলতিস
"জৈব যৌগ আমার পড়া আছে.. তুই ওটা বাদ দিয়ে পড়... নো টেনশান...!"
সেই যে অন্যায় করলে নিজের কাঁধে নিয়ে স্যরের হাতে মার খেতিস।
দুজনেরই এক মেয়েকে ভালো লাগলে  
দুজনেই সরে যেতাম।
মনে সাহস দিয়ে বলতিস, "ভয় পাবি না...
মেয়েটাকে কালকে বিষ্ণু স্যারের কোচিং এর পর
একটা চিঠি হাতে ধরিয়ে দিস-
যা হবার হবে আমি দেখে নেব।
না বললে কষ্ট পাবি!"
আমার প্রেমিকার কাছ থেকে চিঠি এনে হাতে দিয়ে বলেছিলিস,
"এই নে...দেখিস কাকিমা যেন না দেখে।"
শুধু সেই স্কুলেই না
সংসারে অশান্তি হলে -
বলতিস ডোন্টবারি বি হ্যাপি,
দুজনে ফুচকা খেতাম কুঠিঘাটে-জেঠিতে।
রতনবাবুর ঘাটে - হাসতে হাসতে বলতিস
খা খা পেট ছাড়লে বলবি পেটে চুল গেছে।
স্কুলটা ছিল আনন্দের কুঞ্জবন
সংসারটা মধুবন-
তোর ছোঁয়ায় আনন্দঘন হয়ে উঠতো মন।
আর আজ একা একা চিতায় উঠে গেলি
স্বার্থপর-
একবার ও বললি না তুই -
কি তোর কষ্ট?
দড়িটাই তোর বন্ধু হলো
আমি নই -
===