অর্জুন। তুমি মহাবীর?
মাছের চোখে তীর মেরে আমাকে জয় করেছিলে বলে?
ভালোবাসার স্বর্ন মন্দিরে দিয়েছিলে দেবীর আসন।
আমি ভেবেছিলাম,
এইতো আমার সেই স্বপ্ন,
যা দেখেছিলেম প্রতিদিন।
সুন্দর সংসার, ভাশুর দেবর মমতাময়ী শাশুড়ি।
আর কি চাই?
সেই স্বপ্ন অকস্মাৎ ধুলোয় মিশে গেল।
যে দিন আমার স্বপ্নপুরীতে পা রাখলাম।
তফাৎটা বুঝে গেলাম সেদিন।
বাপের বাড়ি আর শশুর বাড়ি।
কেন অর্জুন কেন বললে তুমি মায়ের জন্য জিনিস এনেছ?
আমি কি বাজার থেকে কেনা কোন বস্তু?
আর, আর তোমার মা?
না দেখেই বলে দিল পাঁচজনে ভাগ করে নে?
তুমি প্রতিবাদ করো নি অর্জুন।
হ্যাঁ ঠিক সত্যি বাক্যটাই ব্যবহার করেছ তুমি।
পন্য -
তাই পাঁচজনে ইচ্ছে মতো ব্যবহার করেছ আমায়।
আমার মনের কোনো দাম নেই?
আমার ইচ্ছের কোনো দাম নেই।
কারণ আমি পন্য।
আমি শশুর বাড়িতে আছি।
তুমি কোন প্রতিবাদ করো নি অর্জুন।
যেদিন তোমার ভালোবাসা পেতে ইচ্ছে করত,
তোমার অন্য ভাইয়েরা আমাকে তার বিছানায় -
কাকে ভালোবাসবো বলতো অর্জুন। কিভাবে?
কেন পেলাম না তোমার একার ভালোবাসা?
তুমি তো আমাকে ভালোবাসো নি অর্জুন?
একটার পর একটা,
অন্য নারীর প্রেমে পড়েছ তুমি ও তোমার ভাইয়েরা।
কামনা করেছ বহু নারীর পানি গ্রহনে।
পাঁচ পাঁচ জনে মিলে আমার শারীরিক মানসিক নির্যাতন করেছ অর্জুন।
প্রতিবাদ করিনি।
কারণ আমি অবলা নিঃসহায় এক নারী।
তোমাদের ইচ্ছের হাড়িকাঠে নিত্য দিন বলি হয়েছি আমি।
তুমি প্রতিবাদ করনি অর্জুন।
দুঃশাসন আমার বস্ত্রহরণ করে পাপ করলে, তোমরা কি?
একবারও আমার হয়ে প্রতিবাদ করেছ? তাতো করোনি?
তা করবে কেন? ওরাও তো তোমার ভাই।
আমি কোন বারবনিতা অর্জুন?
যে সবাই মিলে আমার দেহমন উপভোগ করেছিলে?
যে চুল ধরে দুঃশাসন হিড়হিড় করে টানতে টানতে
ভরা রাজসভায় আমার শাড়ি খুলে
শত ভাই মিলে উপভোগ করলো আমার দেহটা।
তাও তোমরা আমাকে সতী আখ্যা দিলে।
কেন দিলে?
তোমাদের এই অত্যাচার যাতে বাইরের লোক না জেনে ফেলে
তাই তো?
পাশা খেলায় হেরে গেল তোমার দাদা।
জমি বাড়ি ধনদৌলতের সঙ্গে আমাকে ও বাজি রেখে দিল।
প্রতিবাদ করো নি অর্জুন।
অনায়াসে আমাকে গুরুজন গুনীজনেরা নির্লজ্জের মতো দেখলো।
কই কেউতো কোনো প্রতিবাদ করেনি?
আমি না তোমাদের ঘরের লক্ষ্মী।
তোমাদের ঘরের বউ?
আসলে তুমিতো আমাকে পন্য করেই এনে ছিলে।
পন্য হয়েই রয়ে গেলাম।
তাই নয় কি?