আরে ও শঙ্করবাবু
কোথায় গো?
বলি সারাদিন মদ গাঁজা খেয়ে
বেশতো আছো কৈলাশে।
সংসারও চলে যাচ্ছে মোটামুটি,
ভিক্ষে টিক্ষে তো আর চাও না।
আর ভিক্ষেই বা কে দেবে?
যা অবস্থা মর্তের।
তুমি তো জানো।
পঞ্চাশ টাকা পিঁয়াজ।
আলু চোদ্দ পনের।
চালের দাম আকাশ ছোঁয়া।
তা এখন, চাট কি দিয়ে হচ্ছে?
বুঝলে না?
আরে বাবা বাংলা মদের চাট।
আমাদের এখানে বাংলা
ভালোই চলছে।
না না সে বাংলা আর নেই
এখন দারুণ।
চকচকে বোতলে ঝকঝকে মাল।
আলোয় ঝকঝকে।
কেউ বাদ দেয় না এখন।
স্ত্রী পুরুষ, স্বামী স্ত্রী, বন্ধু বান্ধবী, সব-
অ্যাঁ কি বললে?
বউ?
না না মারে না আর।
এখনতো বাড়িতেই সব।
অকেশন লাগে না।
ঝড় বৃষ্টি, বিয়ে বাড়ি, অন্নপ্রাশন,শ্রাদ্ধ -জন্মদিন
সবাই খাই-
ও বাবা তুমি কি খাও
বলোতো?
সারাদিন বুঁদ হয়ে থাকো।
একটু দিও না।
আসলে এই অত্যাচার আর সহ্য হয় না। বুঝলে।
ভালো লাগে বলো?
আর কদিন পরেই তো তোমার গিন্নী
ঝগড়া করে এখানে চলে আসবে।
আর তাঁর যা জাঁকজমক।
জানো?
এখানে সোনার পরে সোনার রথে বসবে।
আর এদিকে আমাদের ফুটপাতে রেললাইনের ধারে,
খালের পাড়ে,অনাহারে-
কতো মানুষ খেতেই পাই না।
সোনার দাম চল্লিশ হাজার ভরি।
কি করি?
নিদারুণ বায়না তোমার গিন্নীর।
রুপোর রথ, সোনার গয়না,চন্দননগরের আলো,
নানান সব।
একটু বুঝিয়ে বোলো না?
এখানে ও কালীবাড়ির কালি
আছেন।
বুঝলে না।
আরে তোমার গিন্নীরই আর এক রুপ।
হ্যাঁ, একে তো কোনো কাজ নেই, শিল্প নেই,
তার ওপর বৃষ্টি বন্যা। মহামারি,ক্ষরা।
দিশাহারা।
ফসল নেই, চাষ নেই, হাটেবাজারে আগুন দাম,
ও শঙ্করবাবু একটু দেখো বুঝলে।
টাকার দামটাও পড়ে গেলো।
কত লোকের চাকরি গেল।
মালিকে পয়সা দেয় না।
বোনাস !
সেতো ভুলেই যাও।
যেন আগুনে পা দিয়ে চলছি।
ছাই হচ্ছি না।
হয় তুমি ছাই করো,নয়তো বর দাও,
নোট ছাড়ো,ও বাবা তুমিতো আবার ভিখারি। মাকে বলো বুঝলে?
আমি না, রাস্তার ঐ বাচ্ছা গুলোকে চারদিন খাওয়াব।
জামা কিনে দেবো -
মা আসছেন যে -
===