(১)


- কড়ি-বর্গা গুলো এখনো জেগে..।  হিসেব আছে সেদিনের.. তুমি, আমি ও সাদা পালঙ্ক.. ফুল ছড়ানো ছিল লাল-গোলাপ.। তুমি বলতে তোমার প্রিয়.। আর আমি ? বলতে পারি না.. সে কোন আবেশ.। আকাশ-বাতাসের কথা জানি নে. রাত্তিরের একপশলা বৃষ্টিতে মাটির সোঁদা গন্ধ তোমার শরীরের গন্ধে মিশেছিল..। নাহ.. আর কখনো পাই নি সেদিনের গন্ধ..। আজ তুমি নেই.. দেখ কড়ি-বর্গাগুলো আছে, লাল-গোলাপ আছে.। আকাশ-বাতাস সব আছে.. নেই শুধু একপশলা বৃষ্টি সাথে সোঁদা মাটির গন্ধ.. তোমার গন্ধ।


                                 (২)


- বাগানের কাঠ গোলাপটা কাল বিকেলে ডাকছিল।  সামনে যেতেই বলে তুমি এসেছিলে।  আমি শুধোলাম - কবে-কোথায়?  দ্যাখো কান্ড, পাশের হলুদ প্রজাপতিটা সাদা চন্দ্রমল্লিকার থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসল গোলাপ পাতায়।  বুঝলাম তুমি এসেছ।  কিন্তু এরকম কেন? আকাশ নীল ছিল, সাদা পেঁজা তুলো মেঘের শোভা ছিল উজ্জল, হারাতেও চাইছিলেম..।  কিন্তু তুমি কড়ি-বর্গার বন্ধনের বাইরে ছিলে।  আসতে চাও নি..। পালঙ্কটা এখনো আছে।  সেগুন কাঠের ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় এখনো চিরুণিটা রাখা..।  চুলের কাঁটা-ক্লিপ-সেফটিপিন সব যে-যার মত আছে।  তুমি নেই.. আসবে? আবার? গাইবে গান?  বিছানা যে অপেক্ষায় পরিপাটি সাদা চাদর পেতে.. তুমি শোবে নিবিড় পরশ নিয়ে..


                                (৩)


সখা, যদি বলি আমি এসেছি তোমার প্রতিটি শ্বাসে..।  তুমি মানবে….।  কড়ি-বর্গারা জানে আমি আছি তাদের সাথে.. বাথরুমে আর্শিটা ভাঙলো বলে তোমার মন খারাপ, পুরোনো পার্কার পেনটা কালকেই বিগড়োলো, ডেটল ফুরিয়েছে - তুমি স্নানের শেষের ডেটল ব্যবহার করতে পার নি, ভাত ফুটাতে গিয়ে হাত পুড়িয়েছ.. এরকম কত কি… তুমি কি দেখেছিলে জলের সাথেও আমি ছিলাম তোমার আঙুলের যন্ত্রণায়… তোমার অ্যানেস্থিসিয়া..।  সখা, তুমি রাখ বা না-রাখ আমি আছি-আছি-আছি..।