সোনাই-এর আজ ভারি মজা, বাড়িতে লোকে ভর্তি, সবাই আদর করছে কিন্তু কেউ দেখার নেই। মাম্মাম বকে নি, দিদান-দাদাই শুধুই চুপ। সোনাই-এর খেলার বিরাম নেই।  মাম্মাম একবার জড়িয়ে ধরে শুধু বলে - সোনাই বিট্টু দিদির সাথে বাগানে খেল।  বিট্টু দিদির সাথে আজ খুব খেলছে লুকোচুরি, ফুটবল, পিছনের বাগানে মাটি তোলাতুলি…সব। অন্যদিন হলে মাম্মাম গম্ভীর স্বরে ডাক দিত - “ সোনাই… ভেতরে এস।  বিট্টুদিদির সাথে ভেতরে খেল।”  আজ শুধু একবার মাথায় হাত বুলিয়েছে। মুখটা কেমন মায়া ভরা লাগে আজ মাম্মামের।  বাড়িতে আজ অনেক লোক এসেছে, কিন্তু সবাই যেন কাঁদছে।  মাম্মামকে কি সব জিজ্ঞেস করছিল, পাপা কে দেখতে পায় নি সারাটা দিন। বোধহয় অফিসের কাজে বাইরে গেছে।  পাপা তো ব্যস্ত মানুষ, অনেক কাজ।  মাম্মাম বলে - তুমি বড় হলে পাপার চেয়েও বড় হবে।  অনেক অনেক বই লিখবে..। পাপা নাকি অনেক বড় লেখক। আচ্ছা লেখক কি?


বাগানে আজ চড়াই দুটো ছিল, শালিক জোড়াও।  ফিঙেটাও এসেছিল।  কাঠবিড়ালীটাতো সোনাই-এর পা’র কাছে গড়াগড়ি দিয়েছে। বাগানের বড় আম গাছ তলায় পিপড়েগুলো সোনাইকে কামড়ায় না।  বিট্টু দিদি একবার ভেতরে গেছিল তখন পাশের বাড়ির ভুলো আর ওবাড়ির পুষি দুজনে একসাথে এসেছিল।  দুটোতে ভীষণ ঝগড়া, কিন্তু আজ ছিল খুব ভাব। আমার গায়ে ল্যাজ নেড়ে দিয়ে গেছে।  এই রে জামাটা নোংরা হয়ে যাচ্ছে।  দাড়াও জামাটা একটু তুলে নিই নইলে মাম্মাম বকবে, মাটি লেগে যাবে তো।  আজ বাড়ির ভেতরে কে যেন কি একটা বলতেই মাম্মাম বলে ওঠে - সোনাই মাটি দেবে না।  আচ্ছা তোমরা জান মাটি দেওয়া কি? আমি তো মাটি দিয়েই খেলি..।  বড়রাও খেলে নাকি?


বিট্টু দিদিকে জিজ্ঞেস করেছিলাম মাটি দেওয়া কি? বিট্টু দিদি কিছু না বলে বাড়ির ভেতরে চলে গেল।  দাড়াও পাপা আসুক, জিজ্ঞেস করবে।  পাপার কাছে সব উত্তর থাকে। পাপা না কিসব বলে ঠিক বুঝতে পারি না, সেদিন বলছিল মাম্মামকে - “ রক্তবীজ বাড়ছে - সাবধান!!”  আচ্ছা রক্তবীজ মানে কি?