আজ শিশুদের জন্য আমি জানিনা কি লেখি,
শিশুকালের ছবি গুলোই পেছন ফিরে দেখি....
জুটত নাকো কারো পায়ে রঙিন জুতো মোজা
অঙ্ক ছিল গন্ডগোলে বাংলা ছিল সোজা।
মাংস পোলাও ভালোমন্দ গল্প শুনে বাবার
আমার পাতে লবন তেলে পান্তা হত সাবাড়!
ভূগোল টুগোল বিষয় টিষয় নিয়ে শুতাম চটে
ইতিহাসের পাতিহাঁসটা ডিম দিত রোজ ঘটে!  
মাথায় ছিল গোবর পোড়া, ভেবে যেতাম ভুল
খুঁজে যেতাম কোথায় কাঁ কাঁ ? তুয়ার ঝুঁটি চুল?
আম ফেলে দে, জাম ফেলে দে, ঝড় এনে দে ভুতো!
বল্লে পরেই বুদ্ধুবাবুর খেতাম লাঠির গুঁতো।
বিজ্ঞান কারো ভাল্লাগেনা, যদি বলতাম - তিতো!
কাচাঁ কঞ্চি! চাঁদু মাস্টার! ছিলবিলিয়ে দিতো!  
শাসন পেলে মানুষ হবি - ব'লেই পল্টু পাল
দুম দারাক্কা ধুম ধারাক্কা পিঠে ফেলত তাল!
তাল খুঁজিতে পুকুর পারে হাবলা যেতো ছুটে
রেগেমেগে গাল ফুলাতো, ব্যাঙ ডাঙাতে উঠে।
বিট্টু বনি পিসিমনির,  আসলে মামাবাড়ি .......
ওদের সাথেও করে ফেলতাম - ঝগড়াঝাটি, আড়ি!
চোর চারিশো ডাকাত ছশো, আর দারোগা হাজার
ছোট্টবেলার সেসব খেলা ভীষণ ছিল  মজার !
চোর দারোগা পুলিস ডাকাত কার খামে কে ঢুকে?
ছলচাতুরী করলে খানিক খেলা-ই যেত চুকে
স্নান করে চুল উলুভুলু সেজে থাকলে খাঁকু  
কান ধরিয়া গান শেখাতো আমার ধ্রুব কাকু।
একটু বড়ো যেই হয়েছি ডান্ডা গুলি  হাতে
পিন্টুদাদার বড়ো কথা - "খেলবো না তোর সাথে,
টাক ফাটাবি নাক ফাটাবি চোখও হবে কানা
তুই যে কেমন দস্যিছেলে সবার আছে জানা।"
পাটখড়িতে বসলে ফড়িং ধরতে যেতো ট্যাপা
শিশুবেলায় চঞ্চলা মন, কার না থাকে খ্যাপা ?
কারো কথায় কান না দিয়ে আমার সাথে জোলা
সাহস করে ব্যাট বল হাতে খেলতো বিকেলবেলা ।
মদনা সাধনা জগা পদা খেলত হাডু-ডুডু,
রোজ কালুভাই খেলত শুধু পঁচার সাথেই লুডু !
বেলা শেষে সন্ধ্যে হলেই গুটিয়ে তামঝাম
এট্টু আধটু সবাই নিতো পড়তে বসার নাম।
এলার্ম ঘড়ি ঢং ঢং ঢং যেই বাজিতো  সাত
লিখে পড়ে অং বং চং তনায় কুপোকাৎ
রাত ফুরাতো  নিভে যেতো দিদিমনির কুপি ?
সুকুমারের আবোল তাবোল হাসতো চুপিচুপি।  
মা শোনাতো সকাল সকাল মুখস্থ কর পড়া-
"ধনধান্যে পুষ্পেভরা আমার বসুন্ধরা....."
ফলে ফুলে ডাল নেতিয়ে হাসতো সবুজ  বন
ফুল কুড়াবো ফল চুড়াবো ভাবতো অবুঝ মন।
পূজা পোনাম বোন দুটিকে দিতাম গাঁদা ফুল
গাছে চড়ে খেয়ে নিতাম মাধব দাদার কুল।
কোকিল কন্ঠে থাকত জেগে বোশেখ মাসের ধুম
পাকা আতা চুরি করে আমরা সবাই গুম !
ইসকুলে রোজ করে যেত মাস্টারে বক বক
হাতে ডাস্টার পেলে অমিত খয় করিত চক।
হাতি ঘোড়া মুন্ডু মাথা বিড়াল বাঘের মাসি
ছবি এঁকে দাঁত কেলিয়ে ভোলার যেকি হাসি!
"আতা গাছে তোতা পাখি" ঝরতো মনার বুলি
শৈশবের সে দিনগুলিকে কেমন করে ভুলি।
অতীত কথার স্মৃতি আগলে রাস্তা যত পেরোয়
ছন্দ ছড়ার গন্ধ পেয়ে তিল থেকে তাল বেরোয়
জীবনযুদ্ধে হার মানিনি , শত সংগ্রাম শয়ে
মনের মতো চাকরি পেয়ে, পুলিশ গেছি হয়ে।
অতীতকথা স্বপ্নে যেদিন গেল আমার ভেসে
'মস্তবড় কবি তুমি' ,,,,, বলল রবি হেসে!