হামি কাঙ্গালা ছিলাম বুটঠ্যে
তয় টেকার কাঙ্গাল লয়।
মাস্টর যা কইলেক উ হামার
হামার মনে ধরল,
মানুষ কইতে যা বুঝাইলো -
তা হল আলোকিত মানুষ।


হামি আশেপাশে মনে মনে
যা খুঁজে ফিরতে লাগলাম
উ আমার বাবু বাদে আর যার দেখা মিলল
ও হামার ভানু সরদারের বেটা -
মুঙলু আছিল
মুঙলু- হুহু মুঙলু।


মানুছ ট্যাকে ভাল বাইসতাম খুব,
খুব হামাক খুবে ভাল্ বাইছতক।
ভাল্ বাইছতক ছুবাই।
মা মরা বিট্টি   তো,
খুব ছুটতে মরে লায়।
যখন হামার দাঁত পইড়লোক দুইট্যা-
তোখন মইরইক মা।


ছাঞ্জের  বেলায় জন্মিলা-
বিটি বুরহির নাম মিলাই দিলেক
ছনঝা মালতি ।


ছাঞ্জের  বেলা মাস্টার বৈষ্ণত
ছরদারের উঠানে,
পড়তাম আমি আমরা সবাই।


রাত হুলে বাপু আইস্থক লীতে,
সরদার গিন্নি কুহিতক-
মালতিক যাইতে লাই দিব,
উক হামার বেটার বউ কইরবরে।


আর হামি ,  হামি একটু বেশি বুঝতাম,
আমার খুব লজ্জা লাগত।
কিন্তু মুংলু বুইযল দুই বসর পর ।


আমার বাপু পইরলো- জ্বরে
হাঁটতেলাই পারে।
রাইতে পড়া শেষে সরদার গিন্নি ,
মংলুক দিল সাথে।
মাঝ রাস্তার ফট কইরা-
মংলু আমার হাতে ধরল।


তোখন হামার আকাশ বাতাস-
হিম কইরা ভয় লাগলো।
উর হাত থেকে হাতটা ছাড়াই
ছুপরিত দৌড়ে গিয়া -
আগল দিলাম আইটা।
খুটার ছাথে মাথা হেলান দিয়া
কাইনতে লাগলাম।


মা লাই বইলা
একটা ব্যাটাছিলা হামার
সুযোগ নিল ?


কোষ্ট লাইগলো, ভয় লাইগলো,
রাগ লাইগলো, সবশেষে শরম লাগলো ভাইবা-
ভালবাসল বুঝি, কিন্তু!
কেন হে একবার বাতলাই দেখত,


এরপর দিন কাইটল, রাইত পারইলো,
বিতালয় পৌউছ- বিতালয় ফাল্গুন,
বয়স বাড়ল বুঠে।
থোকা থোকা আমের মূল
আছলো গাছে,
নয়া বাতাস লাগল,
তাল গাছের আগায়, পাতায়,
মাঠে, লাউয়ের ডোগায়।
বাদ গেল না কুছু।
নানা বাছে মন ব্যাকুল কইরা
ফুটলো বনফুল ।
রাইনলো বুনো পলাশ, পারুল
রাহীংলো শাল আর মহুল।


শুকনা পাতা কুড়ায়  চুলায় দিলাম
উর ছাথে দিলাম মন।
কেউ না জানলেও চলত
যদি- জানতো একজন।
কে আসলো কার মনের ঘরে
জানবে কি আর পরে।


ওর পর মুংলুও হামাক কিছু কইল না
আর হামিও পাইরলামলয় কহিতে
উঠানের পড়া  শেশ কইরা -
মুংলু ইস্কুল যাতে লাইগল
আর হামি থাইকলাম ঘোরে।


তাংধিতাং মাদিলা বাইজল  
কুহু কুহু কোকিলা ডাইকল
দুড়ের জিনিছ কাছে আইল
কাছের জিনিছ দুড়ে।
জুয়ান মন লুটপাট লইরা
লিজের অজান্তে চুখে পাতায়
জাগা করে লিল মুংলু।
মনের ঘোরে উঠল চান
ছি ঘরে হামি ছাইযলাম রাধিকা
আর মুংলুক কইরলাম শ্যাম।