তুমি যদি সেধে সেধে
গ্রীষ্মের তাপে পোড়া পাথরের ফলকে
আমার নাম লিখে রাখো
আমি তিব্বতের বরফ কোথা পাই ।


তুমি যদি এক অগ্নিগর্ভ কামানের সম্মুখে
দাঁড়িয়ে আমার অস্তিত্ত্ব রক্ষা করতে বলো
আমি তো আর সুপারম‍্যান বা শক্তিমানের
মতো অবাস্তব চরিত্র নই
যে নিমেষে কামানকে নিস্তেজ করে দিতে পারি।


তুমি যদি আমায় এভারেষ্টের উচ্চতা
মেপে আসতে বলো
আমি তো আর রাতারাতি
রাধানাথ সিকদার হতে  পারি না।


আমি তো কোনো সম্রাট নই
যে তোমার জন‍্য সুরম‍্য প্রাসাদ তৈরী করি
–নই বাঁশরীধারী
যে বাঁশির সুরে তোমায় পাগল করে দিতে পারি,
না পারিজাত বৃক্ষের জন‍্য ইন্দ্রের সঙ্গে যুদ্ধ করতে পারি।


যদি কোনো অসাধ‍্য সাধিতে না পারি
তাই বলে কি আমি তোমায় ভালোবাসিনি?
আমার নিঃশ্বাস কি কোনোদিন তোমার কেশ আন্দোলিত করেনি?
তোমায় দেখবো বলে নিজের কাজ ফেলে
রাস্তার মোড়ে চায়ের দোকানে
ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়েছি।
ফুরিয়ে যেত চায়ের কাপ…..কাপের পর কাপ।
কোনোদিন ফিরে তাকিয়েছো…কোনোদিন তাকাওনি
তাই বলে কি আমি তোমায় ভালোবাসিনি?
আজ না হয় ফিকে হয়ে গেছে যমুনার জল
ভেঙে গেছে সাঁকো
ওপারে যেতে পারি না।
তাই বলে কি ভালোবাসিনা?


–নেই সেই তৃণভূমি
যা তুমি নিজের হাতে রচনা করেছিলে
সময়ের সাথে রাখালের গোরুর পাল
মাড়িয়ে গেছে সব।
আমার অশ্রু বিন্দুর সমষ্টি
যে ঝরনার সৃষ্টি করেছিল
তাও শুকিয়ে গেছে।
যে তরুর কান্ডে লেখা ছিল আমাদের নাম
সেই গাছও কাঠুরিয়া কেটে ফেলেছে।
পুড়ে ছাই হয়ে গেছে কোনো উনোনের আগুনে।


দিনের পর দিন কাজের খোঁজে
ঘুরে বেড়িয়েছি এ শহর থেকে ও শহরে।
তোমার দেওয়া স্মৃতিগুলোও হারিয়ে ফেলেছি
……এ শহরে…….ও শহরে……
নির্জন বারন্দার এক কোণে বসে যখনই ভাবি
তোমার দেওয়া কিছুই নেই অবশিষ্ট আর
তখনই মনে পড়ে–
ডাইরির পাতায় সযত্নে আজও গাঁথা আছে
তোমার একজোড়া কানের দুল।


                    ***********