একদা এখানে একটা বাগান ছিলো।
রোজ সকালে পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে প্রতিবেশীদের ঘুম ভাঙতো,
ভ্রমরের গুঞ্জনে মৌনতা ভাঙতো,
সম্বিত ফিরে শুনতো একাগ্র চিত্তে কোকিল কণ্ঠে 'আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি'।
এখানে মৌমাছি মধু সংগ্রহ করতো,
গড়ে তুলতো মৌচাক, মৌয়ালরাও ব্যস্ততায় কাটাতো সময়।
বাগানের মালিরাও সযত্নে পরিচর্যা করতো চারাগাছগুলোর, যেন তারা দিনে দিনে হয়ে উঠে মহীরুহ।
এখানে কতগুলো স্বপ্নবাজ স্বপ্নের বীজ বুনতো,
স্বপ্ন বাস্তবায়নের সিঁড়ি একেক করে উৎরে উঠার কৌশল রপ্ত করতো।


অথচ এখন -
ঐসবের আর স্মৃতিচিহ্নের লেশমাত্রও অবশিষ্ট নেই এখানে।
এক বৈশ্বিক অতিমারীকালে সবই ধূলিসাৎ করে দিয়ে গড়ে উঠেছে যান্ত্রিকযানের খাবারের গামলা!
এখানে শুনা যাবে পাখিদের কিচিরমিচি আর ভ্রোমরার গুঞ্জনের পরিবর্তে যান্ত্রিক আওয়াজ,
লোকালয় অতিষ্ঠ হবে শব্দদূষণে।
মৌমাছির মৌচাক আর মৌয়ালের ব্যস্ততার পরিবর্তে বাড়বে তেলজীবিদের আনাগোনা।
বাগান মালির জায়গা দখলে করবে জ্বালানি যোগানদাতা!
এখানে এখন স্বপ্নবাজদের স্বপ্নের আনাগোনা আর সিঁড়ি উৎরানোর বদলে, উচ্চগতির রেকর্ড ভাঙার দম নিতে দেখা যাবে।


এভাবেই দোর্দণ্ডপ্রতাপশালী অতিমারীর প্রভাবে পড়ে অজস্র ভ্রুণের বটবৃক্ষ হওয়ার সূতিকাগারটি পরিণত হয়েছে যান্ত্রিকতার জ্বালানি যোগানদাতায়।


এখানেই লুকিয়ে আছে একটা বাগানের অপমৃত্যুর ইতিহাস।
_______________
২৯ এপ্রিল ২০২১;
দুপুর ১২.১৫ টা।