এতটুকু চাইনি রে সোনা
এত শোভা এত আড়ম্বর
ব্যাগ বোঝা বই খাতা
মাথায় পেতে হবে শুধু নম্বর।


ঘুমে চোখ করে ঢুলুঢুলু
দিদিমণি বকে ইস্কুলে
সারারাত জেগে পড়া
মা বলে 'আন গোটা গোটা নম্বর তুলে
নইলে এবার চাড়াবো শূলে।
ও বাড়ির ছোট রেনু
কত পড়ে রাত দিন জেগে জেগে
মায়ের হাতটি ধরে সে
যায় না কখনও ওই ফুলবাগে।
তালা বন্দি করে
এবার রাখবো তোমায় ঘরে
ইস্কুলে প্রথম হতে হবে
সারাদিন পড়ে পড়ে।'


সারাদিন পড়ার ঝাঁকুনি
মায়ের বাঁকা চোখের তিরস্কার
শিশুর মনে পরে বাঁধন
কল্পনার নাই কোন আধিকার।


এতটুকুই চেয়েছিনু খোকা
বসন্তের হিল্ললে বাতাস ছুটুক
বুক জড়ানো ধনটি আমার
কোকিল কণ্ঠে গেয়ে উঠুক।
উড়ন্ত ফড়িং-এর পিছে পিছে
যাক্ সে দূর দুরান্তে ধেয়ে
কখনও আঙিনায় বা ফাঁকা মাঠে
খেলা করুক ফুল ফল মাটি নিয়ে
গাছপালার সাথে ফিসফিস
করে বলবে কত কথা,
হারিয়ে যাওয়া পুতুলের
সুখদুঃখের কত ব্যথা।


বেলা গড়িয়ে সূর্য যাবে ঢলে
অবশ হবে তার দুরন্তপনা
বিভোর ঘুম কেড়ে নিয়ে যাবে
তার আঁকা ছবি কত চেনা অজানা।
শিশির ভেজা কপালে
মা এঁকে দেবে ঠোটের ছোঁয়া
মায়ের এ আবেশ যেন
হিম জুড়ানো তরুর শীতল ছায়া।


সাঁঝের বেলায় আদর কণ্ঠে
ডাকবে মা-- ''এস খোকা, আমরা পড়ি এবার
রাজকুমারের ছুটে চলা
মাঠ ঘাট আর তেপান্তর।''