উত্তাল জলে পড়েছে ভাঁটা জীবন নদীর বুকে
নিস্তরঙ্গ হয়েছে নদী, আজ মরিছে ধুঁকে ধুঁকে !!
ভেবেছিনু কভু হবোনা বৃদ্ধ, এই ধরণী পরে
দেহ হতেছে ক্রমশ জীর্ণ, কাঁপে থরথর করে।
পাক ধরেছে মাথার কেশদাম, নড়ে পড়িছে দন্ত
দেহখানা ছিল অতীব সজীব সবল প্রাণবন্ত।
এই দেহতরী উজান বেয়ে চলে যেত বহুদূর
ঝড়ের কবলে পড়ে হতো কত,কাতর ক্ষুধাতুর !!
এই দেহতরী গড়েছে দক্ষ সুরসিক কারিগর
ঝলমলে সাধের ময়ূরপঙ্খী, কত যে রুচিকর !
জীবন নদীতে ভাসিয়ে তরী চলিছে দুলে দুলে,
পাল উড়িয়ে ভাসিয়ে তরী ভিড়ায় কূলে কূলে ।
হাল ধরি রসিক নেয়ে ভাটিয়ালি গায় তার সুরে
ভাটির দেশে তরীখানি তার পৌঁছে সুজনপুরে।
জীবন নদীতে এই দেহতরী ডুবে যাবে নিশ্চয়
সতত থাকে কঠিন ঝুঁকি, প্রাণে জাগে সংশয় !!
উঠবে তুফান ডুববে তরী জীবন নদীর বাঁকে
আসবে না কেউ রক্ষিবারে আমার আর্ত ডাকে !!
জীবন নদীতে ডুববে জানি আমার দেহতরী
ঝড়ের তোড়ে ছিঁড়ে যাবে পাল সেই ভয়েতে মরি !!
করব জোরালো ত্রাহি ত্রাহি দয়াল স্রষ্টার কাছে,
অন্তিমক্ষণে ডাকলে কি আর বাঁচার উপায় আছে ??
জন্মের পরে মৃত্যু আছে, শমন ঘুরে সবার পিছে
আসবে শমন বাঁধবে কষে এই কথা নয় মিছে !!
আমি ভাবি সময় থাকতে গুরুতে মিশে যাই
গুরু স্বভাবে স্বভাব মিশিয়ে মুক্তি যদি পাই !
এই তো আমার জীবন নদীতে ভাঁটার লগ্ন এলো,
আসবেনা আর ভরা জোয়ার সব শুকিয়ে গেলো।
ভাসবেনা আর দেহতরী উচ্ছল জল তরঙ্গে
দুলবে না আর জীর্ণ তরী, লাস্যময়ীর ঢঙে !
বিশুষ্ক বিশীর্ণ নদী, তার কূল ভেঙ্গে আজ নিঃস্ব
নিস্তেজ রুগ্ন নদী, তার হারায় অপরূপ দৃশ্য !!