সূর্য পৃথিবীর কার্নিসে সময় হয়েছে তাঁর
ঢলে পড়বে এক্ষুনি চোখের পলক থেমে যায় যেমন,
আবার দেখা দেবে আর একটিবার
আরেক নতুন আকাশে নতুন রূপে নতুন উদ্যমে;
আমি গোপালপুরের সমুদ্রতীরে,
আমার সম্মুখে বিস্তৃত জলরাশি দিগন্ত-জোড়া,
অসীম শীতলতায় ছুঁয়েছে আকাশ।
এইখানে গভীর সমুদ্রের উপর আকাশ যেন দাঁড়িয়ে আছে কার অসীম স্নিগ্ধতায়,
সরু দীর্ঘ বিচের উপর অজস্র মানুষের ঐকান্তিক আলোড়ন,
পৃথিবীর সব রঙ রস ভুলে গিয়ে, পৃথিবীর সব দুঃখ ভুলে গিয়ে মানুষ এখানে,
সমুদ্রের সাথে মেতেছে নতুন করে আপনমনে,
অদূরে দেখা যায় শত শত ডিঙি নৌকোর তরঙ্গে দোলাচল,
যেন শত শত কুমীরের মাথা ওঠা-নামা করছে শিকারের সন্ধানে,
যদিও তাঁদেরও নোঙর দিয়েছে মাছের শিকারে।
সমুদ্রের ওপারে অজানা তথ্যের ভীড়, কোন্ স্থান কোন্ মানুষের রঙে
জীবনের ঘটেছে অবক্ষয় কেউ কি তা জানে?
তবুও সূর্য প্রাতঃকালে দিনের পূর্বাভাসে রেখেছিল অন্তিম দিনের কথা,
আঁধারের সাথে এখানেই সমুদ্রের বক্ষঃস্থল তুলনায় অনেক স্ফীত,
মানুষের হৃদয় জুড়ে আছে এই স্ফীত সমুদ্রের সাথে,
সৃষ্টির রূপভেদের অনন্ত কাহিনী এখানে ধরা পড়ে;
এখানেই সমুদ্রের জলে ধুয়ে যায় সমস্ত বিষণ্ণতা,
ধীরে ধীরে নেমে আসে আঁধার, ঘনীভূত হয় জীবনের সব আস্বাদ,
থেমে যায় যেন কালের পৃথিবী;
সমস্ত চিত্র চুরি করে নিয়ে গেছে গভীর অন্ধকার নিঃশব্দে,
এখানে এখন শুধু একটাই রূপ সমস্ত ধর্ম, ভাষা, নারী-পুরুষ, কিশোর-কিশোরী,
সব একাকার হয়ে গেছে আঁধারের রূপে তাঁর বশ্যতায়।
আঁধারের আগমনের মধ্য দিয়ে আকাশের শুরু হয়েছে নিজের জীবন
ঘুমিয়ে-পড়া নক্ষত্রেরা জেগেছে এখন,
যেন পৃথিবীর নগ্নতাকে চেয়েছে আকাশ আরেকবার।