বসন্তের শৈশবে আমার প্রাণ যেন খিলখিল হয়ে
ঝরনার মতো হাসে
আমার ইচ্ছে হয় দুরন্তপনার আস্বাদ পাবার,
আমারও নতুন জন্ম হয়ে থাকে গাছেদের সাথে।
গ্রীষ্মের প্রখর উত্তাপ তাদের প্রাণ কেড়ে নেয়,
তাদের চামড়ায় ফাটল ধরে বিবর্ণ হয়,
নীরস হয় শরীর আমার মতো,
মাংসগুলো কাঠ হয়ে যায়,
শীতের সেবা-শুশ্রুষায় কিছুটা জীবন ফিরে পায়।
বর্ষা তাদের রক্ত দান করে
সমস্ত শরীরে রক্ত ছুটো-ছুটি করে সতেজ হয়।
গাছেদের সেই সতেজ সবুজাভ আমাকে ডেকে নিয়ে যায়
সেই অরণ্যে গভীর অরণ্যের ভিতর,
আমিও যেন প্রাণ ফিরে পাই।
এমনিতেই বার্ধক্যের ব্যাধিময় জরাগ্রস্ত জীবন,
কোন নুতন প্রত্যাশার নেই কোনো আহ্বান।
জীবনের পরিমাপটা যদি একেবারেই অধরা থাকত
নিশ্চয়তা অনেক বেশি থাকতো তবে।
খুব বেশি হলে আরও যদি খুব বেশি হয়
দশ কুড়ি বছর হাঁটবো এই ভীড় শব্দময় শহরে
কিংবা ঐ-যে দেখা যায় এক অজানা গ্রাম নাম না জানা গ্রাম,
যেখানে এই সুবিশাল বিস্তৃত আকাশ তাঁর নীলাভ রঙে
মাথা নুইয়েছে পদতলে তাঁর বিনম্রতায় এই মস্ত পৃথিবীর নিকট।
নতুন কিছু পাবার তাগিদ একেবারেই ক্ষীণ অবলুপ্তপ্রায়,
শক্তিহীন আশাহীন ভগ্ন হৃদয়ে শুকনো শরীরের ভিতর
প্রাণটা ছটফট করে বড্ড বেশি চঞ্চল হয়ে ওঠে,
পলাতকের নেশায় যেন আচ্ছন্ন হয়ে পড়ি,
নতুন জায়গার সন্ধানে ছুটে যেন প্রাণ!
তাই মন কাড়ে গভীর অরণ্যে যাবার এই বসন্তে।