রাত এলে আমি জেগে উঠি
যেন হয়ে উঠি কোনো নিশাচর শিকারী প্রাণী—
হয়তো বাঁদুড় কিংবা প্যাচা
নয়তো শেয়াল কিংবা নেকড়ে
অথবা দোর্দণ্ড প্রতাপ নিয়ে
বনের মধ্যে রাজত্ব করতে আসা বাঘ কিংবা সিংহ।
এসবের কিছুই না হয়ে আমি হতে পারি
কোনো নির্মোহ ঔষধী গাছ
কিংবা হাওয়া।
সেসব নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই
কিংবা এই আলোচনার উদ্দ্যেশও নয় তারা।
আমি তো কেবলই রাত নিয়ে বলতে এসেছি
করতে এসেছি অন্ধকারের গুণকীর্তন,
সূর্যের আলোর থেকে পূর্ণিমার চাঁদই কি আমার বেশি প্রিয়?
নাকি ঘোর অমাবস্যায় মা কালীর আরাধনা ছাড়া আমার যায়না বছর?
এতোসব প্রশ্নের উত্তর আমার জানা নেই,
গভীরভাবে ভেবেই দেখিনি কখনো।


যাকগে সেসব কথা, আসি আমার রাতের কাছে ফিরে
দিনের বেলায় হারাই আমি পর-মানুষের ভিড়ে,
তাইতো বছর দশেক আগে ডাকলো আমায় রাত
নিশির সাথে তখন থেকেই প্রেমের সুত্রপাত;
সেই প্রেমেতে ঘোল খেয়েছি জলের মধ্যে ডুবে,
সূর্য মামা বড্ড খারাপ— রোজ উঠে যায় পুবে।
চাঁদ ডোবাতে রোজ উঠে সে নামায় আমায় নিচে
তার জন্যই মান-অভিমান, যাচ্ছি আমি ফেঁসে;
ভিলেন সুরুজ বুঝতো যদি প্রেমের এমন দশা
কবেই যেতো আকাশ ছেড়ে, চাঁদকে রেখে একা!
জনম-জনম শত্রু তোরা, থাকগে তোদের মতো
তার জন্য রাতের কাছে করবি আমায় তেঁতো!
যাক সে কথা, থাকগে পড়ে অতল সমুদ্রে
আমি আসি আমার প্রিয় রাতের আঁচলে;
সেইখানে খুব দস্যি আমি, নিরোর মতো বাজাই বাঁশি
ভাবতে বসি প্লেটোর মতো, নাটমঞ্চে খুব অভিনয়
সাজতে বসি শিশির ভাদুড়ি,
কিংবা লেখক সলিম-জাভেদ
সুরসম্রাট আল্লা রাখা
কিংবা শাহরুখ-সালমান খান
কিইবা নই আমি!


রাত-মোহনের এমন নেশা, তীব্রতর ব্যথা
সুখের থেকে ওই যাতনা রোজ পেতে চাই একা;
একা-একাই একলা ঘরে মিলবো রাতের সাথে
দিনটাকে নাই সয়েই নেবো ফের মিলনের আগে।  


৮ মার্চ, ২০২৩।