জীবনের এই সন্ধিক্ষণে নিজেকে বড্ড অসহায় লাগে।
এত আলো চারিদিকে,
তবু আধারের মাঝেই করি বিচরণ,
এঁকে এঁকে সবাই চলে যাচ্ছে,
আমার সময়ও প্রায় শেষ,
জানিনা কেমন করে হবে,
কোথায় হারাবো জীবনের শেষ নিঃশ্বাস। চারিদিকে অন্ধকার শুধুই অন্ধকার,
অন্ধকারের হাতছানি,
দূর থেকে ভেসে আসে,
কে যেন আমায় ডাকে,
আয় ঘরে ফিরে আয়।
এই বুঝি এলো সেই ক্ষণ,
সে এসেই দরজায় দাঁড়িয়ে বলছে আজ এখুনি তোমাকে যেতে হবে।
এক সেকেন্ড সময় দেবেনা আমায়,
যেই অবস্থায় থাকিনা কেন আমাকে যে যেতেই হবে,
এই ধরিত্রীর সকল মায়া ত্যাগ করে।
চার বেহারার পালকী আসবে উঠানে,
কেউ খুব তড়িঘড়ি করে আয়োজন করবে শেষ গোসলের, কাউকে পাঠানো হবে কবর খুঁড়তে, কাপড় আনবে আমার জন্য,
একেবারে সাদা, ধবধবে সাদা কাপড়,
আমাকে নতুন সাজে সাজানো হবে,
মা আমায় দেখে চিৎকার করে কাঁদবে,
পাশেই বোন টা বিলাপ করে বলবে ওরে বইনা তুই
কই গেলি,
আমার ছেলেটা খুব ছোট
হয়ত তখনো বুঝবেনা মা হারানোর যন্ত্রণা কেমন হয়।
মেয়েটাও কাঁদবে,
খুব কাঁদবে আর বলবে মা তুমি ফিরে এসো।
তখন আমি আর ফিরে আসতে  পারবোনা,
ঘরের চারকোণে আমার আত্মা দেহবিহীন ছুটোছুটি করবে,
আর চিৎকার করে বলবে এইতো আমি, কেউ শুনবেনা আমার সেই আর্তনাদ। অপলক দেখবো সবার ভালোবাসা,
তখন ধীরে ধীরে সবার ভালোবাসার ছবি ফুটে উঠবে,
নতুন জীবিত আত্মা এক তৃপ্তির নিঃশ্বাস নিয়ে বলবে আজ তোর সকল প্রাপ্তির অবসান হলো। ভালোবাসা আজ তুই পরিপূর্ণ।
খাটিয়ায় করে আমায় নিয়ে চলল সবাই,
মা, আমার মা চিৎকার করে বলবে।
ও রে না, ওরে নিস না
আমার কলিজা ছিঁড়ে নিস না বুকের ধন।
সময়ের আগেই হারিয়ে গেল আমার মানিক রতন।
নিয়ে চলল আপন গৃহের পানে,
রাখলো মাটিতে, চাটাই, খলফা বাঁশ এই সকল দিয়ে সাজিয়ে দিলো ঘর,
সকল মায়া ত্যাগ করে ফিরে গেলো সবাই আপন ঘরে,
আমার আমি রইলাম পরে,
মাটির দেহ মাটির ঘরে,
পৃথিবীর মায়া ছিন্ন করে,
মাত্র আড়াই দিনের সকল আপন মানুষগুলো সবাই হইল আমার "পর"


২/৮/২০১৮ সময় ১২:৪২