যদি প্রিয়তম রামচন্দ্র হয় !
স্ত্রী'কে জ্বলন্ত চিতায় তুলে -
নিকেশ করে দিতে উদ্যত হয় ,
সীতার পবিত্রতা প্রমাণের জন্য ।
বলো, তবে কি আর বেঁচে থাকতে ইচ্ছে হয় !


যে প্রিয়তম একদিন তার প্রেয়সীর জন্য -
এনেছিল এক- আকাশ ভালোবাসা ।
প্রেয়সীর হাতে হাত রেখে বলেছিল ,
তোমার জন্য বাঁচব আমি অনন্ত জীবন ।
তোমার হয়েই থাকব আমি ইহ-জনম, পর-জনম।
এমনই অঙ্গীকার করেছিল প্রিয়তম সেদিন-
বলেছিল, তার প্রেয়সীই তার জীবনের এক পরম প্রাপ্তি   ।
যা কিছু হয়েছে শুভ তার জীবনে -
সবই -ঐ প্রেয়সীরই জন্যে।
এতো- বড় কথাটা সেদিন বিশ্বাস করার সাহস হয়নি ওর,
আবার না করবার মতো মনের জোর কোথায় !


সেই প্রিয়তম যখন স্বামী হয়ে এল জীবনে ,
'ভালোবাসা'এই শব্দটাই তার জীবন থেকে গেল হারিয়ে !
সেই প্রেয়সীই হল, তখন লক্ষ্মীছাড়া !
স্বামীর যা কিছু মন্দ, সব নাকি তারই জন্য !
যে প্রেয়সী একদিন ছিল তার স্বপন-চারিনী !
সেই কিনা, স্ত্রী হতেই হয়ে গেল দুর্বৃত্ত-চারিনী !
স্বামীর অধিকারে সেদিন বজ্র-কঠিন ভঙ্গিমাতে -
বলল স্ত্রী'কে ' দূর- হয়ে যাও বাড়ি থেকে ' !


বলো, এরপর ও কি সেখানে থাকা যায় !
নাকি, থাকতে ইচ্ছে হয় !


স্ত্রীর সব কাজের সব কথার বিপরীতে চলাটাই- আজ তার জীবনের অভিমুখ ।
তাই আজ, যে কথাই সে বলে -
সব কিছুতেই খুঁজে পায় স্বামী, বর্জ্যের কটু গন্ধ।
তার কোনো কথার যে কোনো ইতিবাচক দিক থাকতে পারে,
মস্তিষ্কের এই বিশ্লেষণকারী কোষগুলিই -
আজ যেন পক্ষাঘাতে গিয়েছে অসাড় হয়ে ।
তাই ,কেবল সে দেখতে পায় -
নেতিবাচক দিক টাই সকল কথায়।


এই যেমন ধরো ,
যদি কখনো সে বলে-
সুস্থ হয়ে বাঁচতে ,
শৃঙ্খলা, নিয়মানুবর্তিতা, স্বাস্থ্য সম্মত জীবন ধারায় চলতে ।
আজ, যা বিশ্বের প্রতিটি মানুষ অভ্যাস করছে।
তখনই তার মনে হয় -
এভাবে হয়তো তার উপর তার স্ত্রী,
প্রভুত্ব বিস্তার করতে চায় !
তার স্বাধীনতায় শৃঙ্খলার নামে আসলে ,
দাসত্বের বেড়ি পরিয়ে দিতে চায় !
এমনই নেতি-বাচক দৃষ্টিতে -
তার সকল কথাই আজ বিবেচিত হয় !


বলো, এরপর আর কি তাকে কিছু বলা যায় !
নাকি, কিছু বলার ইচ্ছে হয় !


তাই ভবিষ্যতের সেই ভয়ঙ্কর দিন গুলোর ছবি -
চোখের সামনে ভেসে উঠলেও -
আজ স্ত্রী হিসাবে বুকে পাথর চেপে ,
সেই অনাগত ভয়াবহ ভবিষ্যতের দিন গুনতে হয় !


তাই, আজ শুধু সন্তানের কথা ভেবে -
সকল যন্ত্রণা'কে বুকে নিয়ে ,
একজন মা হয়ে বেঁচে থাকতে হয় !
শুধুমাত্র মা হয়ে বেঁচে থাকার জন্য -
প্রতি-নিয়ত যুদ্ধ করতে হয় !