রাত দশ'টা বাজল  ,
এখন টিভি'তে খবর বলছে  ,
মায়ের রান্না হয়েছে অনেকক্ষন  -
এখনও দিদি কেন ফিরল'না মা ?


বলে গিয়েছিল আজ-
অফিস থেকে তাড়াতাড়ি ফিরবে ,
পুজোর সব কেনাকাটা-
ভাই'কে নিয়ে সেরে ফেলবে।
বলে -গেল,
কিন্তু এখনও কেন ফিরল'না মা ?


মা এসে দরজায় বসল  ,
বাবা রাস্তায় পায়চারি করতে শুরু করল,
রাজু কেবলই ঘর-বার করতে লাগল।
এরপর সাইকেল'টা নিয়ে একটা টর্চ হাতে-
অন্ধকারের মধ্যে বেরিয়ে পড়ল ।

রাস্তায় যেতে যেতে ,
সাইকেলের সামনে এসে পড়ল -
নিমেষ কালো একটা বেড়াল ।


মুহূর্তের জন্য থমকে দাঁড়াল ,
আবার চলতে শুরু করল -
স্টেশনে যখন পৌঁছাল ,
তখন রাত এগারোটা'র বনগাঁ লোকাল ঢুকছে।


অনেক লোকের মধ্যে দিয়ে ,
একরাশ উৎকন্ঠার শেষে -
রাজুর দু'চোখ দিদি'কে খুঁজে পেল ।


রাস্তায় দু'একজন ত্রস্ত পথচারী  ,
গলির ভিতর কুকুরগুলো কেবলই  -
ঘেউ -ঘেউ - করে ডাকছে  ।
হঠাৎ অন্ধকার ভেদ করে গলির মুখে-
গোটা চার-পাঁচ লোক  -
মুখে কালো কাপড় বাঁধা -
এসে ওদের পথ আটকে দাঁড়াল ।
একজন হঠাৎই -
দিদি'কে ধ'রে টান মারতেই -
এক ঝটকায় রাজু তার হাত'টা ছাড়িয়ে নিল ।


লোকটা ছিঁটকে পড়ল রাস্তায় এক ধারে-
রাজু কোনোরকমে দিদিকে নিয়ে-
পাশ কাটিয়ে যাবার চেষ্টা করল ।


কিন্তু ওরা সবাই তখন মহোল্লাসে দৌড়ে এসে-
ঢুকিয়ে দিল লম্বা ছুরি-
বুকের মধ্যে এফোঁড় ওফোঁড় করে।
রাজু পড়ে রইল রাস্তায়।


আর মেয়েটি তখন দৌড়াচ্ছে-
আর চিৎকার করছে-
বাঁ-চা-ও- বাঁ-চা-ও- বাঁ-চা-ও---
পিছনে পিছনে ছুটছে কিছু-
মানুষ খেকো নেকড়ের দল।


এরপর অনেক রাতে-
পুলিশের ভ্যান এসে দাঁড়ালো-
ওদের বাড়ির দরজায়।
বাবাকে নিয়ে গেল থানায়-
তারপর লাশকাটা ঘরে।
দু'টি রক্তে ভেজা সাদা কাপড়ে ঢাকা-
লাশ শনাক্ত করবার জন্য।