করোনার আতঙ্ক ছড়িয়ে পরেছে-
দিগন্ত থেকে দিগন্তে।
প্রতিদিনই দীর্ঘ থেকে দীর্ঘ-তর হচ্ছে-
মৃত্যু মিছিল।


সেই ভয়াল আক্রমণকে প্রতিহত করতে-
দেশে-দেশে ঘোষিত হলো লকডাউন।
বন্ধ হলো রেল, বাস, বিমান পরিবহন-
বন্ধ হলো কারখানা , স্কুল, কলেজ, দোকান।
দিন আনি-দিন খাই মানুষগুলো-
হারালো কাজ , অন্নসংস্থান।


গ্রাম, নগর, শহর, বন্দর আজ অবরুদ্ধ।
গলি থেকে রাজপথ আজ স্তব্ধ।
পরিযায়ী শ্রমিকরা আজ কাজ হারিয়ে রয়েছে অভুক্ত।
বিদেশ বিভুঁইয়ে আজ ওরা সহায় সম্বলহীন নিরাশ্রয়।


জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে দাঁড়িয়ে-
অভুক্ত অশক্ত শরীরেই ওরা ফিরতে শুরু করল-
পরিবার পরিজনের কাছে নিজভূমে-
শত সহস্র মাইল পায়ে হেঁটে-
একটু নিশ্চিন্ত আশ্রয়ের উদ্দেশ্যে।


কত গ্রাম, শহর, নদী,জন-পদ পেরিয়ে-
কেউবা পৌঁছাতে পারলো আপন পরিজনের কাছে।
কেউবা মাঝ পথেই ক্লান্তির যাত্রা শেষ করে-
শায়িত হলো চির-নিদ্রায়।


কেউবা যানবাহন শূন্য রাজপথে-
শ্রান্ত শরীরটাকে দিতে চেয়েছিল-
দিনের শেষে একটু বিশ্রাম।
কিন্তু সেটুকুও কেড়ে নিল এক লহমায়-
রাতের অন্ধকারে এক পণ্যবাহী ট্রাকের চাকায়-
পিষ্ট হয়ে তাল-গোল পাকিয়ে গেল ওরা সবাই।


কোনো একটি দল আবার যাচ্ছিল-
লকডাউনে ট্রেন শূন্য রেল-লাইন ধরে।
মাইলের পর মাইল পার হয়ে-
যখন ওরা ক্লান্ত-শ্রান্ত-
ঘুমিয়ে পরেছিল ঐ রেল-লাইনের উপরেই-
পরম নিশ্চিন্তে।


গভীর-রাতে কোনো ট্রেনের রেক্ চলে গেল-
ওদের দেহগুলিকে ছিন্ন- ভিন্ন করে দিয়ে গেল।
ছড়িয়ে ছিঁটিয়ে পড়ে রইল-
ওদের ছেঁড়া জামা, ছেঁড়া চটি-
আর কিছু-বাসি রুটির টুকরো।


এগিয়ে চলেছে লকডাউন-
এগিয়ে চলেছে মৃত্যু-মিছিল-
এগিয়ে চলেছে-
এগিয়ে চলেছে-