আমার দুটি বাড়ি আছে


আমার দুটি বাড়ি আছে,
একটি বাড়ির সবাই মিলে, হৈ হল্লায় দিন কাটে,
দুঃখে সুখে হেসে খেলে, এক সঙ্গে পথ হাঁটে।
আর একটি বাড়ি অবক্ষয়ী,
গা ছম ছম হিমশীতল,অনিশ্চিতের অন্ধকার,
ধুলোয় ঢাকা জটিল জাল,কষ্ট ঝরে নিরন্তর।
আমার দুটি উঠোন আছে,
একটি  উঠোন ছেলেবেলা,মায়ের হাতের আলপনা,
দুষ্টুমি আর খেলাধুলা, বন্ধু দলের দস্যিপনা।
আর একটি কেবল ধুসর মাটি,
সাদা চাদর,ফুলের মালায়, ঠাকমা দাদু, বাবা মা,
ওই মাটিতেই চিরনিদ্রায়,ছাড়িয়ে গেল সকল সীমা।
আমার দুটি পাহাড় আছে,
একটি শ্যামল সবুজ মোড়া,ভোরের আলো পাখির গান,
মন মৌতাত মহুল ভরা,শীতল বাতাস জুড়ায় প্রান।
আর একটি যেন গিলতে আসে,
সারা গায়ে পাথরকুচি,চড়াই পথে রক্ত ঝরে,
দুয়োরানির প্রানের মাছি,পাষাণ ঘায়ে গেছে মরে।
আমার দুটি নদী আছে
একটি শান্ত স্রোতস্বিনী, মিস্টি জলে কুলু কুলু,
ওই পারে তে বৈতরণী , এই পারে মন আলুথালু।
আর একটি প্রবল খরস্রোতা,
পাগলাঝোরা নষ্টকারী,ছুটছে যেন দিশাহারা,
পাড় ভাঙছে,ডুবছে তরী, দিচ্ছে করে সর্বহারা।
আমার দুটি আকাশ আছে,
একটি ব্যাপ্ত অসীম সুনীল, বৃষ্টি তে হয় রামধনু রং,
বিভোর চোখে হারায় অতল,চুম দিয়ে যায় হলুদ ফড়িং।
আর একটি করুন উদাস মলিন ,
নিকষ কাল মেঘে ঢাকা, হঠাৎ রোষে বজ্রপাতে,
দুঃস্বপ্নের চমক রেখা, অবাঞ্ছিত স্মৃতির স্রোতে।
দূই বাড়িতে, দুই উঠোনে,দুই পাহাড়ে, দুই আকাশে,
দুই নদীতে সময় বহে, আপন মনে খেয়াল বশে,
এমনি করেই গুটি গুটি, জীবন হাঁটে আপন পথে।
                                                          (স্বরচিত)