ফিরে দেখা, ফিরিয়ে দাও
***********************
ফিরে দেখার সময় বুঝি ফুরায়
সামনে অনন্ত আকাশ ডাকছে
নক্ষত্রের নিবিড় রহস্যের মায়ায়
মুচকি মুচকি হাসছে আর বলছে
অনেক তো হলো আর কেনো
এবার তো চল ভেসে যাই অবিরত
এলে বুঝবে কত কষ্টে ছিল জীবন
ভাঙ্গা মন , ছিঁড়ে যাওয়া সুতো
ফেটে যাওয়া খুশির বেলুন
অহেতুক পরিশ্রম,তবু কি জুড়তে পারলাম ?
ডানা মেলে ভেসে এস তবে
আনন্দ, যাকে খুঁজতে এত পণ্ডশ্রম
এখানে বাতাসে শুধু তাই পাবে
কারণ এখানে হিংসা নেই
পরশ্রীকাতরতার ক্লেদ নেই
ভেদ নেই, দ্বিচারিতা নেই
লোভ,লালসা, অন্ধকার মনের
কুৎসিত ভন্ডামি নেই,
আর যে টুকু দুঃখ এদিক ওদিক
কিছু মন ভেঙে যাওয়া
যন্ত্রনার টুকরো স্ফটিক
আর বিষাদের গন্ধ মাখা হাওয়া
ছড়িয়ে আছে এদিক ওদিক
সেগুলো  যত্নে কুড়িয়েছি
ভাগাভাগি করে নিয়েছি
একজনের ক্ষুদার কষ্ট
নিজের অন্নের কিছু অবশিষ্ট
দিয়ে মিটিয়ে দিয়েছি
ছাদ নেই যার মাথায় পরে
ঠাঁই দিয়েছি আমার ঘরে
কিছু লোমশ বস্ত্র, শীতের কাপুনি
কমাতে, তাকে জড়িয়ে দিলাম এমনিই
যেগুলো কোন এক কোনে পড়েছিল
অবহেলায়,অনাদরে, পাকিয়ে তালগোল
এমনি করেই দুঃখের দুয়ারে
বিনীত বিদায়ের তালা ঝুলিয়েছি
আমরা এখানে শুধু ভাসছি
অনাবিল শৈশব আনন্দ বাতাসে
খুব সহজে আর খুব অনায়াসে
তাই আর দেরি নয়
চলে এসো এই সময়
জাগ্রত কুলকুন্ডলিনির সোপানে
বিষাক্ত বাতাসের বেমালুম নির্বাসনে
নকল সম্পর্কের মুখোস ছিঁড়ে
কায়া মায়া হীন, হারিয়ে না যাওয়া ভিড়ে
লালসা , ইঁদুরের দৌড়ের অবসানে
সহমর্মী হয়ে ভালোবাসার অর্ঘ্যে
ভেসে যাই চল সপ্ত মিনার স্বর্গে
কিন্তু কে আমাকে এইসব গল্প শোনাও?
এত যে ডাকছি তবু কই দেখা দাও ?
দেখা দাও হে মোর স্বপ্নের ফেরিওয়ালা
আমি যে পথভ্রান্ত পথিক পথভোলা
আলোকিত অলিকের অনন্তে নিয়ে যাও
আগুপিছু দোটানা মরিচিকা বিহ্বলতা মেটাও
শৈশবের সহজ সরল দিনগুলি ফিরিয়ে দাও
কবে তুমি এই আকুতি কান পেতে শুনবে
পল অনূপল দিনকাল মাস বৎসর ফুরাবে
আর অবশিষ্ট যেটূকু বাকি রাখবে
আশায় আশায় প্রতিটি মুহূর্ত কাটবে ।
********************
রাধা মাধব মুখোপাধ্যায়
*********************