মহাপুরুষেরা কখনো তাঁদের মন্দির বানিয়েছে দেখিনি
তাঁরা মন্দিরে থাকেন এমন তথ্যও কোথাও পাইনি –
তবে শুনেছি তাঁরা বুক ভরা ভালবাসা নিয়ে
মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ছুটে গিয়েছেন-
বুকে টেনে আলিঙ্গন করেছেন-
আর সময় সুযোগ বুঝে মানবিকতা উন্মোচনের
সহজতম পথটি ধরিয়ে দিয়েছেন।
তাঁর প্রেমালিঙ্গনে আবিষ্ট হয়ে বহু মানুষ তাঁকে কেন্দ্র করে
আবর্তিত হ’তে হ’তে তাঁদের চলন চরিত্রে
এক বিশেষ বিন্যাস অভিযোজনায়
এক দিব্য দ্যোতনা কিরনায়
এক বিশেষ মানবে অধিষ্ঠিত হয়েছেন-
তাঁরাইতো দেবতা।
এই দেবতা ও অনুগত বৃন্দ
তাঁদের প্রিয় পরমকে পবিত্র-বেদীতে প্রতিষ্ঠা ক’রে
মানবিকতা উন্মোচন মানসে রচনা করে
প্রার্থনা গৃহ ও আশ্রম –
জ্ঞান, ভক্তি, প্রেম ও ব্যক্তিত্ব লাভের পীঠস্থান।
এই মহাপুরুষেরা জন্মগত ভাবে কোন বিশেষ গোষ্ঠীর হলেও
তাঁদের প্রাণকারা ডাক প্রতিটি মানুষের জন্য।
তাঁরা মহাপুরুষদের মধ্যে বিভেদ রচনা করেন না,
বুঝিয়ে দেন তাঁরা পরস্পর পরিপূরণকারী।
তাঁদের উদ্দেশ্য এক এবং তা’ মানুষের ভিতর মানবিকতার উন্মোচন।


ঈশ্বর ও শয়তান- দুই-ই নিরাকার, শক্তি স্বরূপ।
একটি অস্তিত্ব রক্ষাকারী আর অন্যটি অস্তিত্ব বিনষ্টকারী,
ঈশ্বর প্রেম আর শয়তান হিংসা।
এই দুই শক্তিরই আশ্রয়স্থল মানব।
ঈশ্বরীয় শক্তি যে মানবে প্রকট, সে দেবতা
আর শাতন শক্তি যেখানে প্রকট, সেই মানবই দানব।
দেবতা ও দানবের লড়াই নিত্য বিদ্যমান আলো আঁধারের মত।
আলোর আগমনে অন্ধকার সরে দাঁড়ায়,
আলোর প্রস্থানে অন্ধকার ফিরে আসে।
অস্তিত্ব ধ্বংসের দামামা যদি কোথাও বেজে ওঠে,
বুঝে নিতে হবে ওটা দানবের কারিগরি।
তাই অস্তিত্বের পূজারী আমরা যারা –
তাঁদের এটা ভুল করলে চলবেনা –
ধ্বংসের জন্য দায়ী ঈশ্বর নয়, কেবল শয়তান;
দেবতা নয়, কেবল দানব,
অন্ধকারের জন্য দায়ী আলোর অপসরণ।
অন্ধকারকে তারাতে একটিই অস্ত্র, তা’ আলো।
আলোকে আহ্বান করতে হবে,
আলোকে আনয়ন করতে হবে,
আলোকে দৃঢ় ভাবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে;
তখন অন্ধকার আপনিই ঘুচে যাবে।
আলো যতই প্রখর হবে, অন্ধকার ততই বিদায় নেবে।
তাই ব্যভিচার দেখে, মানবতার অপমান দেখে-
মানবতা উন্মোচনের পীঠস্থান থেকে
মানব দরদী প্রেমিক মানুষের প্রতীক উৎখাত ক’রে
তাঁকে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে দিয়ে লাভ হবে না।
প্রেমিক পুরুষ যেখানেই দাঁড়াবেন
তাঁর প্রেমে মানুষ আকর্ষিত হবেই
একদিন সেখানেই প্রার্থনা গৃহ রচনা হবে।
তাই শয়তানকে সনাক্ত করতে হবে,
তাদেরকে বন্দি করতে হবে,
যদি সম্ভব হয় তাদের মাঝে
প্রেমের বন্যা বইয়ে দিতে হবে
দানব থেকে শাতনকে চির বিদায় দিয়ে
দেবতায় পরিণত করতে হবে।
তবেইতো হব আমরা অস্তিত্বের পূজারী
তবেইতো হব আমরা ঈশ্বরের সন্তান।
আর ধার্মিক তো তারাই।