সওদাগরের ছেলেরা, লইয়া সকল রসদ, গড়িছে ছোট্ট কাফেলা
বাগদাদ চলিছে তারা, পাইতে যথার্থ ইসলামী দ্বীনের শিক্ষা।
সেই কাফেলায় পাঠায় ছেলেকে এক গরীব ঘরের মাতা
দিয়া সামান্য উপকরণ বিদেশ-ভূয়ে করিতে গুঞ্জরন।
চলিছে ধীরে এই কাফেলা নানা গল্প ও গানে
সহসা পথ-মাঝে পরিল তাহারা এক ডাকাত দলের খপ্পরে।
একে একে খোয়াইল সবে যত অর্থ-সরঞ্জাম
শেষে দাঁড়াইল একটি ডাকাত সেই গরীব ছেলের কাছ।
চিন্তাগ্রস্ত সেই ছেলেকে দেখে হুঙ্কার দেয় ডাকাত
তোমার কাছে কি আছে বল, রাখ মোর সাক্ষাৎ।
ডাকাত, সহযাত্রী সকলের দৃষ্টি এবার সেই গরীব ছেলের উপর
ছেলেটি বলিল মোর কোমর-থলীতে আছে চল্লিশটি দিনার।
লুকাইতে নাহি চাহে, মিথ্যা নাহি বলে, নির্ভয়ে করিল স্বীকার!
আশ্চর্য হইয়া লইয়া গেল তারে দল-সরদারের কাছ।
হইয়া সমস্ত অবগত, বিস্ময়ে সরদার কহেন
কোথায় পাইলে এত দিনার, দরিদ্র হইয়াও কেন করিলে স্বীকার?
“যাত্রা কালেতে ভরিয়া দেন মাতা এই চল্লিশটি দিনার
যেন পরমুখাপেক্ষী নাহি হয়ে, বিদেশে কাটাতে পারি শিক্ষাকাল।
মাতা আরও কহেন মোরে, যেন ভাল ব্যবহার রাখি সবার সাথে
মিথ্যার আশ্রয় যেন নাহি করি যে অবস্থাই আসুক সম্মুখে।“
ছোট্ট ছেলের কথা শুনি’, মহা আশ্চর্য দলপতি
যেন বিবেক বীণায় ঝঙ্কার তুলি’ বেহেস্তের সুর উঠিল বাজি।
মুহূর্তকাল স্থির থাকি, সম্বিত যবে ফিরিল আসি, বলিল সাথীদেরে
দাও ফিরাইয়া সকল ধন-সামগ্রী, উহারা হওক অগ্রসর নির্ভয়ে।
মাতৃভক্ত ছেলের প্রভাবে ডাকাত হইল মহান ভক্ত-ওলি
সেই ছেলেটি আর কেউ নয়, মহান-মানুষ আব্দুল কাদের জিলানী(রা)।