বিচারের মানদণ্ড জীবন না ঈশ্বর?
জীবন সকলেই বোঝে, ঈশ্বর অগোচর।
জীবন কঠিন বাস্তব, ঈশ্বর নিরাকার
নিরাকারে কেবা ব্যস্ত, অতি গুটিকয়।
কঠিন বাস্তব নিয়ে চলে এই পৃথিবী
ভাল-মন্দ বিচার হয় পেয়ে স্বস্তি-অস্বস্তি।
সময় সত্তা অতি গুরুত্বপূর্ণ, যদিও নিরাকার
সময় বুঝিয়ে দেয় কর্মের বহিঃপ্রকাশ।
জীবন-গতি ঊর্ধ্বমুখী হলে, হয় আনন্দ অনুভূতি
অশান্তি, অস্বস্তি হয় হোলে অধোমুখী।
জীবন আনন্দ চায়, তাতে লক্ষ্য রাখি স্থির
ভাল-মন্দ, পাপ-পুণ্যের কর গো বিচার।
জীবন তো একা নয়, সমগ্র জীবনই জীবন
সমগ্র জীবনের মাঝে মোদের একক জীবন।
জীবন থেকে জন্মে জীবন, জীবন মাঝে বাড়ে
জীবনের মাঝে চ’লে ফিরে নতুন জীবন গড়ে।
আমি সবার, সবাই আমার, সেবক আমি সবার
এই তো সহজ ভাব- তৃপ্তিদায়ক, পছন্দ সবার।
এ সহজ ভাব বোঝা গেলেও কায়েম করা শক্ত
সঙ্কীর্ণ-অহং ব্যস্ত হয়ে পরে ফলাতে কর্তৃত্ব।
সমষ্টি-স্বার্থকে হেলা ক’রে, আত্মপ্রতিষ্ঠা হয় মুখ্য
ষড়রিপুকে সাথে নিয়ে হয়ে উঠে অহঙমত্ত।
অহং মত্ততাই প্রধান কারণ পৃথিবীর সকল দ্বন্দ্বের
এ ভাব থেকে মুক্ত না হলে থামবে না দামামা যুদ্ধের।
প্রেমই ব্রহ্মাস্ত্র- যাতে হয় সর্বভূতে আত্মবোধ
ও ছাড়া যাবে না সরান- সঙ্কীর্ণ অহং বোধ।
প্রেম মহা সম্মোহনকারী চৌম্বকীয় গুণে ভরা
প্রেম সকলকেই কাছে টানে, করে তার সঞ্চারণা।
প্রেমিক মানুষ ছাড়া, প্রেম পাবো কোথা
প্রেমময় প্রেম স্বরূপ যেন সবার সত্তা।
তাঁর সান্নিধ্য, তাঁর সেবা, তাঁকে অনুসরণ
যতই সক্রিয় হবে, জাগবে প্রেম, হবে অহং মোচন।
ঈশ্বর প্রেম স্বরূপ, জ্ঞান স্বরূপ, কিন্তু নিরাকার
প্রেমময় প্রেম স্বরূপ, জ্ঞান স্বরূপ, জীবন্ত-সাকার।
বিচারের সকল নিয়ম, যুক্তিতর্ক, আলোচনা
প্রেম-ভাব জাগিয়ে তোলার হোক প্রেরণা।
দোষী- দোষমুক্ত হয়ে চলুক সবাকার স্বার্থে
নির্দোষ- আরও ত্রুটি মুক্ত হয়ে, চলুক এগিয়ে।
বিচারে- প্রেম ফুটে উঠুক, প্রেম প্রতিষ্ঠা পাক
প্রেমময়ের নিরিখে হোক প্রকৃত বিচার।