রাজা কহিলেন- করি হাত জোড়
হে মান্য গুরুবর!
দয়া করি কিছু- দিন উপদেশ
সকলের যে মহাবিপদ।


গুরুবর কন- হে রাজন
রাজকোষ হতে-  অর্থ-খাদ্য-বস্ত্র
বিলাও প্রজাদের- লাগিয়ে প্রশাসণ
না করি আর বিলম্ব।


শ্যান দৃষ্টি রাখি- সকলের মাঝে
কেউ যেন না পায় কষ্ট
ধন্য ধন্য করে যেন- সকল মানুষ
সহিয়াও সকল দুঃখ।


রাজ্যে যত আছে বিজ্ঞজন,
সকলেরে ডাকি- সভা কর
যে যে বিষয়ে প্রাজ্ঞ- সবার অভিমত
লও আগ্রহ সহ।


সকল অভিমত করিয়া গ্রহণ-
কর সমন্বয়, রচ- সূত্র-সমাধান
মন্ত্রীসভা ডাকি- দিয়ে সুনির্দিষ্ট দায়
চালাও মুক্তির অভিযান।


মনে রাখিও- মানুষের তরে তুমি রাজা,
নয়কো সিংহাসনের
প্রতিটি মানুষ- তোমার মুখপানে চেয়ে,
ভরসা তোমাতেই ঢের।


আজ্ঞা মত রাজা, মুক্ত হস্তে করেন বাহির
মুদ্রা, খাদ্য, বস্ত্র
বলেন প্রশাসনে- বিলাও সকলে
নিরসন কর কষ্ট।


দু-মুঠো স্থলে- এক মুঠোও যেন
সকলে পায় রাখিও খ্যায়াল
বিশেষ নজর দিও- চিকিৎসা-পথ্যে
আবাল-বৃদ্ধ-বনিতার।


প্রশাসন হৃষ্ট চিত্তে- সেবা ডালি লয়ে
হইলো বাহির,
বিজ্ঞজনের জরুরী সভা- করেন আহ্বান
করিতে উপায় বাহির।


রাজার উৎকণ্ঠায়, উদ্দীপিত হন,
সকল বিদ্বজ্জন
সমস্যা নিরসণে- একে একে সবে
করেন কার্য্য-কারণ বিশ্লেষণ।


মহামারী বিশ্লেষক, কহেন সবিনয়ে
হে মহামান্য রাজন
অগ্নির রোষ, বায়ু- অপের দোষ
হয় যে মহামারীর কারণ।


রাজা কহিলেন মহামারী বিশ্লেষক
যদি দয়া করি করেন- সহজ বিশ্লেষণ
বিশ্লেষক কহেন, অতি উষ্ণ বিঘ্ন করে
পরিবেশের ভারসাম্য।


পরিবেশ বিদ! কহেন রাজা, দয়া করি কন,
কি কারণে ভারসাম্য হরণ
কিভাবে রক্ষা হবে- উষ্ণতার ভারসাম্য
করেন সহজ বর্ণন।


ঋতুভেদে উষ্ণতার হয় ভেদাভেদ,
কিন্তু তাতে নাহি হয়, এমন অঘটন
প্রকৃতির উপর নির্মম অত্যাচার,
সেটাই হয়- প্রকৃতির রোষের কারণ।


নির্মম বৃক্ষ ছেদন, নিঃস্পৃহ বন-সৃজন,
উভয়ে মিলে করে উষ্ণতা বর্ধন
বন্যা-প্লাবন, মহামারী-অতি-মারীর
এটাই মূল কারণ।


রাজার অনুরোধে, সকলে মিলে বসে,
করেন রচনা সমাধান-মানচিত্র
কোন কাজ আগে, কোন কাজ পরে,
করিয়া বর্ণন দেন রাজার শ্রীহস্ত।


সকলকে কর জোড়ে- বিদায় জানিয়ে,
চলেন সোজা গুরুর কাছ
আশীর্বাদ লয়ে, ডাকি মন্ত্রী মণ্ডলে
ভাগ করে দেন সকল কাজ।


এমন রাজা না হলে, মন্ত্রী, আমলা, পার্ষদ
কাজে ঝাঁপান কেমনে
তখনই আস্থা রাখেন, সকল মানুষ,
পূজেন রাজায়, দেখেন সিংহাসনে।