"গৌরবময় বাংলা ভাষা "


রচনায়ঃ প্রফেসর ড. মোস্তফা দুলাল
পিএইচ.ডি. (ঢা.বি.)


জঠর ছেড়ে বাংলা মায়ের কোলে রাখি
পায়ের ধুলি,
আঁখি মেলে বাংলা ভাষায় মায়ের মুখের
কথা বলি।
কালের স্রোতে গড়ে ওঠা বাংলা ভাষার
উর্মিমালা,
দেশ বিদেশে ছড়ায় পড়ে এ ভাষারই
ডাল ও পালা।
রবির মতো আগুন ঝরায় তেজ দীপ্ত
মায়ের ভাষা,
নীল নীলিমায় পেখম মেলে পুরায় মোদের
মনের আশা।
বাংলা ভাষা সব বাঙালীর মনন মগজ
চেতনায় রয়,
সৃষ্টি লগ্ন থেকে বাংলা ভাষা অতিশয়
গৌরবময়।


বাংলা ভাষার কন্ঠ চেপে ধরে হায়নার
কালো থাবা,
ম্রিয়মানে ব্যর্থ বাংলা ভাষার জ্যোৎস্না
সম আভা।
সৃষ্টি লগ্নে ব্রাহ্মণদের সামাজিক ভাষা
ও সংস্কৃতি,
ছেদিয়া বের হলো বাংলা ভাষার তেজময়
উজ্জ্বল দীপ্তি।
বাংলা ভাষার বিদ্যুৎ সম ঝলকানি ও
তীব্র গতি,
অতীত যুগে পত্র পল্লব মেলে ধরে
চর্যাগীতি।
স্বমহিমায় পাহাড় পর্বত ডিঙিয়ে যায়
সকল বাধার,
অব্যাহত রয় এ ভাষার উজ্জ্বল গৌরব
সদা বার বার।


বাংলা মায়ের কোলে মুসলিম শাসনের সু
বাতাস বইলো,
রাষ্ট্রীয় ঝড় ঝঞ্ঝা তখন সব নিস্তব্ধ
হয়ে গেলো।
ঈশ্বরীয় শাস্ত্র তখন লোকভাষায়
আওড়ানো পাপ,
কতক ধর্মের রক্ষণশীলরা একই সুরে
কয় বাপরে বাপ।
তখন দেখি প্রগতিশীল কবি এবং
সাহিত্যিকগণ,
বাংলা চর্চায় এ ভাষাটির করে বিশাল
বিপ্লব সাধন।
কাশিরাম দাস কবি সগির আলাওল
এবং কীর্তিবাস,
বাংলা ভাষার গতি ধারা রাখে উজ্জ্বল
ও অবিনাশ।


তারপর আসে পাক সরকারের কুপায়তারা
ও কালো হাত,
শাসন শোষণ করার জন্য উপড়ে নেয়
বাংলা বলা দাঁত।
মা জননীর বাংলা ভাষায় আওড়ালে যে
মুখে বুলি,
পাক সরকারের হানাদার দল মোদের ওপর
চালায় গুলি।
লৌহ কঠিন আইনের ধারা এক চুয়াল্লিশ,
সদাই ভেঙ্গে,
বাংলা ভাষার মান মর্যাদা রাখে সকল
বাধা ডেঙ্গে।
সালাম বরকত রফিক শফিক আরো অনেক
এবং জব্বার,
লিখে রাখে রক্ত দিয়ে গৌরব গাথা
বাংলা ভাষার।


জাতীয় কবি নজরুল হওয়ায় বাড়ে বাংলার
মর্যাদা মান,
এ সম্মান দেন জাতির পিতা শেখ মুজিবর
রহমান।
এক নয় সাত চার জাতি সংঘে বঙ্গবন্ধুর
বাংলা ভাষণ,
এ ভাষার তেজ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়
সারাটাক্ষণ।
জাতি সংঘ ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ
গ্রহণ করে,
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সব দেশ
পালন করে।
সারা বিশ্বে গড়ে ওঠে বাংলা ভাষার
বেশ জাগরণ,
স্বমহিমায় উড়ে আজ বাংলা ভাষার
বিজয় কেতন।