অদূরে দাঁড়িয়ে কৃষ্ণচূড়া, মাখিয়ে মোর মানস পটে,  গাঢ় লাল রঙটি,
জাঁকালো শাঁখা, আর রক্তিম ফুলে ফুলে নুইয়ে পরছে গাছটি।


পাখির দল ভিড় করে দলে দলে, জুড়ে দেয় গল্পের বাহার,
কিচিরমিচির করে কিসে মশগুল , নিরূপণ করা যে ভার।


কৃষ্ণচূড়া নিয়ে কত কি ভাবনা আর কাহিনী রচিত হয়েছে কালে কালে,
কত পথিক প্রখর রৌদ্র তাপে একটু ছায়াময় কোল খোঁজে এরই আবডালে।


নজরুল- কবি গুরুও লিখেছেন কৃষ্ণচূড়াকে নিয়ে পরিতৃপ্তির মগনে,
নয়কো কোনও কুলীন বৃক্ষ, মুকুলিত শোভাই বারবার কাছে টানে।


আগুন ছড়ানো ফুলের সুবাসিত হেঁয়ালিতে প্রেমিক খুঁজে ফেরে তার প্রিয়তমাকে,
ভুবন ভোলাবে তাঁর হাসি, সুশীতল করবে দাবদাহের উষ্ণতাকে।


কণ্ঠে পরাবে মালা, চুম্বন করবে ললাটে,
অবগুণ্ঠন খুলে যাবে, ভালোবাসা লোটাবে অকপটে।


পথে প্রান্তে কতো শত বৃক্ষরাজি অবহেলে এ ভাবে মেলে,
সৃষ্টিকর্তার অপূর্ব এ দান অগাধ অর্থেও নাহি কভু মেলে।


ভরা গ্রীষ্মে উজাড় করে মেলে ধরে নিজেকে, উপচে পরা যৌবন বিলিয়ে দিয়ে,
ঠিক প্রায় এর মতো আছে একটু হলদে আর লালচে পুষ্প,  রাধাচূড়া  নাম নিয়ে।


কিছু ভোর কেটেছে অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে ওরই পানে, দাঁড়িয়ে মৃদুমন্দ বাতাসে
ধীরে ধীরে ঝরে পরল ফুলগুলি, প্রকৃতির এ পসরা ঠিক বছর ঘুরে আসে।


হে প্রিয় মঞ্জরি তুমি আবার আসবে দীর্ঘ সময় পরিক্রম করে,
করবে সৃজনকে লালন, সৃষ্টি হবে হয়ত কতো গান তোমার ওই রক্তিম অঙ্কুরে।


ঈশ্বরের দেওয়া কাজ সমাপ্ত করে, নিঃশেষ হলে অবহেলে,
তুমি নিলে বিদায় বুঝিয়ে দিয়ে, প্রকৃতির দায়-ভার মোদেরও কিছু মেলে।


এ এক কঠিন ব্রত কর্ম করে যাও, অপরের জন্য নিজেকে ছড়িয়ে দিয়ে,
মনুষ্য জাতি নাহি ভাবে কভু, বৃথাই করে আস্ফালন, নিজ নিজ ডঙ্কা বাজিয়ে।


ঝরে যেতে হবে একদিন সব্বাইকে, হয়ত গাফিলতি থেকে যায় কর্তব্য পালনে
ভাবনা একটু গভীর হোক, জন্ম হোক স্বার্থক নিজ নিজ কর্ম ফলে।
                                          
                                                                      
                কোচবিহার, 01/06/2020