তুমি তখন সদ্য ষোড়শী,
আমি তখন কলেজে ফাস্ট ইয়ার;  
        রোজ ক্লাশ শেষে তোমার
স্কুল গেটে দাড়িয়ে থাকা-
   এক টাকার ছোলা বুটে
দারোয়ান মামার আকর্ণ হাসি।
  চোখ বুজলে এখনও আমি দেখতে পাই।


নীল ডাইরীর পাতায় পাতায়
  গোলাপের ছেঁড়া পাপড়ি
ভাঙা হাতের লেখা চিরকুট।
ছোট্ট ইমোয় স্মিত হাসি;-
তোমার লাল ঠোঁটের
কালো তিলটির কথা মনে করাতো ।


আমার একতালা ঘরের
ছোট্ট রুমটায়,
মাঝে মাঝে ছিল তোমার আসা-যাওয়া।
চুড়ান্ত হিসাবে তোমার ছিল
বরাবরের মতো দূর্বলতা।
কতোটা সত্যি আর কতোটা মিথ্যে
তা অবশ্য -
            বোঝার উপায় ছিল না।
কতোটা আমি তোমাকে পড়িয়েছি
আর ,
      কতোটা তুমি আমাকে-
তা নিয়ে আমার সন্দেহ
তখনকার মতো আজও আছে।


রোজ-ই তুমি আসতে
আমার বাসায়,
কখনও সন্ধ্যামালতির টবে জল দেবার ছলে
                    আবার কখনো -
আমার পোষা তুকুকে আদর কারার বাহানা,
আমার দৃস্টি এড়াইনি-
হয়ত আরো অনেকের ।


তারপর হটাৎ তোমার আসা বন্ধ হলো,
খোজ নিয়ে জানলাম -
                  তোমার বাবার বদলিটা
অনেক দিন ধরেই হবো হবো করছিলো ।


বহুবার তোমাকে খুজেছি ফেসবুকে, হােয়াটস অ্যাপে।
আমার  নাম্বার এখনো বদলাইনি
                     তোমার একটি কলের অপেক্ষায়।
জানিনা  ডাকঘর এখন আর চিঠি বিলোয় কিনা-
তবু আমি প্রতীক্ষায় থাকি  
                           তোমার চিঠির।


অনেক দিন হল বিয়ে করেছি;-
বছর দুয়েকের মেয়ে আছে,


পাশের বাড়ির থার্ড ফ্লোরটা
হটাৎ্ খালি  হয়েছিল কিছুদিন।
  সকাল বেলা বেলকনিতে
চায়ের কাপের সাথে রোজ দাড়াই পত্রিকা হাতে।
চোখটা হটাৎ  আটকে গেলো,
                একহারা গড়নের সেই আদল
আজ এতদিন পরেও আমার চোখ এড়াইনি।
আটপৌরে একখান নীল শাড়ী
কোমরে গোঁজা আঁচল;-
হালকা নীলের সাথে সোনালী আভা-
ভিজে কোথাও লেগে আছে শরীরের সাথে
মনোহরা লাগছিল বেশ।


তোমার হাতের ছোট্ট ফ্রকটা,
                                তারে মেলাতে গিয়ে
আমাদের প্রায় চোখাচোখি।
আলতো করে  মুখটা ঘুরিয়ে নিলাম
এক ছাদের দূরত্বেও তোমার ঠোঁটের তিল
আমার চোখ এড়াইনি।
বিদ্যুতের চমক খেলে গেল সারা শরীরে-
নিমিষে আমি চলে এলাম-
বেলকনি থেকে ঘরে,
বিশ্বাস করো সেই থেকে আমার আর
বেলকনিতে দাড়ানোর সাহস হয়নি  ।