একদিন যদি তোমাকে পেতাম, শুধু একদিন,
এই শহরের সমস্ত দরজা-জানালা বন্ধ করে,
সমস্ত অফিস-আদালত, কাজের ফোন, ইমেইল—
সব ছুঁড়ে ফেলে শুধু তোমাকে জড়িয়ে থাকতাম।
সকাল থেকে রাত অবধি, কিংবা তারও পরে,
যতক্ষণ না শরীর ক্লান্ত হয়ে
শ্বাস নিতে ভুলে যায়,
চোখের পাতা একে অপরের ওমে
ঘুমিয়ে পড়ে নীরবে।
তোমাকে নিয়ে আমি শুরু করতাম
একটা অলস সকাল।
সকাল কি বেলা গড়াল—তাতে আমার কিছু আসে যায় না।
তোমার ঘুমভাঙা চোখে প্রথম সূর্যের আলো দেখতাম,
তোমার এলোমেলো চুলে মুখ ডুবিয়ে
জানতে চাইতাম রাতের স্বপ্নগুলো কেমন ছিল।
তোমার ঠোঁট ছুঁয়ে বুঝতে চাইতাম,
আজকের সকালটা সত্যি কিনা,
নাকি এ-ও কোনো অসমাপ্ত স্বপ্ন?
তারপর তুমি আমায় জড়িয়ে ধরতে,
কোনো কথা না বলে, নিঃশব্দে,
শুধু তোমার হাতের ওম দিয়ে বুঝিয়ে দিতে
কতটা চেয়েছো আমায়।
আমরা ধীরে ধীরে গলে যেতাম
একজন আরেকজনের শরীরে,
তোমার বুকের উত্তাপে আমার সমস্ত শীত কেটে যেত,
তোমার আঙুল আমার পিঠে নাম লিখত,
তোমার উষ্ণ নিঃশ্বাস আমার গলায়
একটা দীর্ঘ শিহরণ বইয়ে দিত।
তারপর?
আমার আঙুল তোমার আঙুলের ফাঁকে আটকে,
আমার ঠোঁট তোমার কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলত,
“তুমি জানো?
তোমাকে ছাড়া একটা দিনও অসম্ভব।”
তুমি হাসতে,
তোমার চোখে থাকত অদ্ভুত প্রশান্তি,
আমাদের শরীরের ক্লান্তি তখনও বাতাসে ঘুরত,
আমরা একে অপরকে ছুঁয়ে থাকতাম
একটা সারাদিনের উষ্ণতা ধরে রাখতে,
এই মুহূর্তটাকে চিরদিনের করে তুলতে।
কিন্তু জানি,
একদিন পরে রাত ফুরোলে,
আমাদের ফেরার সময় হয়ে যাবে।
এই শহরের লোহার গেট খুলে যাবে,
আমাদের ব্যস্ততা, দায়িত্ব,
জীবনের অজস্র হিসেব-নিকেশ ফিরে আসবে,
আর আমরা আবার হারিয়ে যাব
একা, একা, একা।
তবু তোমাকে যদি একদিনের জন্যও পাই,
আমি এই একদিনের মধ্যেই
একটা আস্ত জীবন লুকিয়ে ফেলব।
তোমার প্রতিটা চুম্বনে,
তোমার প্রতিটা শিহরণে,
তোমার প্রতিটা দীর্ঘশ্বাসে
আমি রেখে যাব আমার সমস্ত ভালোবাসা,
যেন তুমি আমাকে বহন করতে পারো,
যেন আমি তোমার শরীরে,
তোমার হৃদয়ে,
তোমার গভীরতম কামনায় রয়ে যাই চিরকাল।