জান স্নিগ্ধজিতা !
তোমায় যেদিন ছেড়ে চলে এসেছি;
সেদিনই আমার মৃত্যু হয়েছে।
ভালবেসে বিয়ে করেছিলাম তোমায়,
চয়নিকার সাক্ষাৎ হয়নি তখনও।
ভালো তো বেসেছিলাম; ভালো রাখিনি।
হয়তো ইচ্ছে করেই ; চয়নিকার দেখা পাব বলে।
পেয়েছিলাম; প্রেমও করেছিলাম।
তারপর একদিন.........।
তোমাকে ডুবিয়ে দিয়ে বিদায় নিলাম।
একটা দিনও শান্তি দেয়নি চয়নিকা।
বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ চয়ন করেও ক্ষান্তি দেয়নি।
ইস ! তুমি যদি থাকতে !......
আফশোষ হয় বৈ কি! তবে কি জান ;
তোমাকে ছেড়ে এসে আমি ভুল করিনি,
তাই এখনও ক্ষমা চাইব না।
আজ আমি মৃত। ডেথ সার্টিফিকেট লিখছে ডাক্তার। পেয়ে যাবে কিছু পরই।
সবচেয়ে মজার কথা কি জান ?
আমি মরে গেছি, সর্বাঙ্গ হিমশীতল। এমনকি ব্রেণ
ডেথও হয়ে গেছে। মস্তিষ্কের মৃত্যু মানেই তো....
স্নিগ্ধজিতা ! আমি কিন্তু এখনও তোমায় দেখছি।
তোমার বুকফাটা কান্না শুনতে পাচ্ছি। পাশে বসে মনকে শান্ত রাখার চেষ্টা করছ।
আমি কিন্তু বেঁচে আছি। সেরিব্রাল কর্টেক্স এখনও সক্রিয়। সব স্মৃতি রোমন্থন করছি। সব - আলাপ থেকে ধ্রুপদ - সব।
আর হয়তো মিনিট দশেক দেখব। ফুসফুস অক্সিজেন দিচ্ছে না। কৃত্রিম শ্বাস অকার্য্যকর ।
নিউরোনের নিজস্ব তড়িৎ প্রবাহে স্মৃতিটা মরে নি।
ধুকপুক করছে। আস্তে আস্তে তড়িৎ প্রবাহও বন্ধ হবে। আর আমি.......।
জান স্নিগ্ধজিতা !
মানুষের মৃত্যুর এই দশটা মিনিট বড় মর্মান্তিক ।
পীড়াদায়ক। সব মরে স্মৃতিকে খেলায়। পিছন ফিরে আবার নজর দেওয়া। মনে পড়ে প্রিয় পরিবার, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবের কথা।
আমার কিন্তু শুধুই তোমাকে মনে পড়ছে। তোমার ভালবাসা; যা আমি ঠুকরে দিয়েছি, তোমার কান্না; যা আমি দু'পায়ে মাড়িয়েছি। তোমার হাসি; যা আমি তীর্যকরেখায় এঁকেছি।
জান স্নিগ্ধজিতা!
আমি ভীষণ কষ্ট পাচ্ছি। অবর্ণনীয় কষ্ট। বললেও বুঝবে না । শুধু মরণের পরই অনুভব করা যায়।
এবার তোমার কথা বলি। ক্ষমা চাইব না। না, নিজেকে এখন আর ছোট করব না। আলমারীটা
খুলবে; বেঁচে থাকার রসদ দিয়ে গেলাম। হাতে আর সময় নেই। এক সেকেণ্ড, আধ সেকেণ্ড, কোয়ার্টার, মিলিসেকেন্ড। শেষ।