পদ্ম পাতায় জল


পদ্ম পাতায় জল টলমল ,জীবনের পরমায়ু
সোনায় মোড়া সুখের সংসার শুধু মরিচীকা ।
প্রেম ভালোবাসা ,টাকা অমেয় খুশীর উৎসব
না চাইতেই ঈশ্বর দুহাত ভরে শুধু দিয়েছেন ।


হঠাৎ শরীর খারাপ কাশি,ব্যথা অসহ্য যন্ত্রণা
ডাক্তার ওষুধ চলে নিয়মিত ,কিছু কমে কিন্তু আবার ,
ওষুধ পাল্টে যায় ,শেষে পরীক্ষাগারে কয়েকটা টেষ্ট ।
অবশেষে ডাক্তার ভ্রূ কোচকায় ,এ কঠিন রোগ সারবার নয় ।
এককোনে ডেকে দীপাকে নিভৃতে বলে মন শক্ত করো
এখন শুধু দিন গুনবার পালা ,কঠিন সময় ।


আকাশ ভেঙ্গে পড়ে দীপার মাথায় হঠাৎ
বিনা মেঘে বজ্রাঘাত বললেও সবটা বোঝানো যাবে না ।
এ কঠিন পরিস্হিতি বুঝবার নয় ,হৃদপিন্ড খুবলে নেওয়া
অপারেশন টেবিলে শোওয়া অর্ধমৃত একটা মানুষ ।


চালু দোকানে বসবার কেউ নেই ,ব্যাংকের টাকা ভেঙ্গে খাওয়া
এবং চিকিৎসা করা ,দুই চার পাঁচ হাজার প্রতিদিন ।
তবু যদি লোকটাকে বাঁচানো যায় ,ডাক্তারই সব নয়
ভগবান এখনো আছে চন্দ্র সূর্য্য ওঠে প্রতিদিন ,পৃথিবী এখনো ঘোরে ।


আস্ত কালো পাঁঠা মানত করে কালীঘাটে এবং তারাপীঠ
কখনও অন্যায় করিনি ঠকাইনি কারো পাঁচটা পয়সা
সৎপথে থেকে সৎভাবে বেঁচে এই কি হতে পারে পরিনাম ?
তারকেশ্বর গিয়ে দন্ডী কেটে শেষে জানায় শেষ অভিলাষ ।


ওর বাঁচবার ভীষণ ইচ্ছে,পঞ্চাশ হয়নি এখনো ,বাচ্চাগুলো ছোট ।
কিন্তু ঈশ্বর বড়ই নিষ্ঠুর শোনেনা কারো কথা ।
সকালে সূর্য্য ওঠে বাগানে কোকিল ডাকে ফোটে হাস্নুহানা
কোন উপাচার মানে না চিত্রগুপ্ত, স্বর্গের কোন দেবদেবী ।
দীপাকে অকুলসাগরে ভাসিয়ে ছোট দুই পুত্র রেখে সাঙ্গ ভবলীলা ।


যখন দেবার ছিল দুহাত ভরে দিয়েছেন বিশ্ববিধাতা
এখন নেবার সময় তার , ঘড়ির হিসেবমতো ,অতএব
আমাদের উপাচার , প্রার্থনা ,বিলাপ কিংবা অভিশাপ
যতই মাথা কোট হৃদপিন্ড উপড়ে দাও সব যাবে বৃথা ।
------------------------------