সেদিন ক্যাফেটেরিয়াতে বসা হবে না তোমার সাথে,
আটপৌরে চেয়ারে হেলান দিয়ে চেয়ে থাকা অপলক।
পাশাপাশি বসে গরম চায়ের কাপে দুমুঠো হাতের আবদার,  
মিলবে না ঠোঁটের স্পর্শ, উষ্ণ হাতের ছোয়া- সীসার কাপে।
গালের বলি রেখায় হাত বুলিয়ে কেউ বলবে না,
" দেখি একটু, দেখি!খুব দেখছি শুকিয়ে গেছ তুমি?" সেদিন কেউ বলবে না আমাকে, কেউ বলবে না।
সেদিন হারিয়ে যাবে মনের গহীনে কষ্ট দেয়া বন্ধুটা-ও,
হারিয়ে যাবে নাক ছিটকানো অচেনা মানুষ গুলো-ও।
হারিয়ে যাবে হিংসায় অরুণ হওয়া চিরচেনা হিংস্রজীবী'রা-ও
হারিয়ে যাবে 'অভিনন্দন' বলা কেউ কেউ, অনেকেই।
যেমন হারিয়ে গেছে আজকে, অতীতের চরণ তলে।
হারিয়েছিল তারা অতীতেও, কালো বরফের মতো।
হরকরার পোশাকের রঙের সময় গুলোও সেদিন বদলে যাবে।
হেমন্তের সায়ং ও সেদিন মিলিয়ে পড়বে মাটিতে।
ধূসর স্তব্ধ নিরবতা, চাপা পড়বে মেদুর ফেনিলতা;
এ-ই রকমই হবে সেদিনের পরিবেশ, ঠিক এইরকম।
সেদিন কেউ খবর নিবে না, চিরায়ত সেই জিজ্ঞেসা-
" কি খবর,  কেমন আছেন বা কেমন আছিস,ভালো তো?"
মনে বিরহের পাহাড় নিয়ে মুচকি হেসে আর বলবো না,
" এইতো ভালো আছি-রে। তুই? ভালো আছিস তো,নাকি? "
সেদিন কেউ হাসবে না আমার করা অদ্ভুত  ভুল দেখে,
সেদিন কেউ লক্ষ্য করবে না আমার পানে চোখের বালি দিয়ে।
আমিও নতুন সঙ্গী খুঁজে নেব আমার জীবনে ,
যেমন খুঁজে নিয়েছে অনেকে আপন মনে।  
সবার মতো করে হারিয়ে যাবো আমিও, একসময়।
বাতাসের সংস্পর্শে যেমন মিলিয়ে যায় বরফ,
আমিও সেদিন মিলিয়ে যাব অন্যত্রে ; অন্য সবার মতো।
ফটোগ্রাফির ভিড়ে সেদিন হারিয়ে যাব আমি,
যেমন খাবারের সমুদ্রে মিলিয়ে পড়ে মসলারা।
গ্যালারির খুপরিতে সেদিন এক শূন্য আমি, না হয় অর্ধবৃত্ত।
যেমন শূন্য আছি আজকে, সেদিন ও রবো হয়তো।
তেমনি শূন্য রবো কালকে, চির শূন্য হয়ে যাব একদিন।
সেদিন হয়তো মুচকি হাসি দেয়া মেয়েটা,
এড়িয়ে যাবে ; অপরিচিত এক আমি-কে দেখে।
হয়তো ছিলেম চির পরিচিত এক বাউন্ডুলে আমি।
কিন্তু তাতে তার কি- ই বা আসে যায়!
হয় এরকম ঘটবে আমার জীবনে,
না হয় কালো বরফ শক্ত হয়ে মিশে যাবে রঙিন আলপনায়,
হয়তো আমারই সাক্ষর অটোগ্রাফ হবে তাদের সাদা খাতায়।
যেভাবে কালো বরফ রঙিন হয়ে চির অক্ষয় হয়ে যায়।
যেভাবে কালো বরফ রঙিন হয়ে চির অক্ষয় হয়ে যায়।  
কালো বরফের বদলে রঙিন বরফে ছেয়ে যাবে এ জীবন,
রঙিন বরফ গলে গেলেও রঙের খেলা বেঁচে রবে আমরণ, আমরণ।