তোমার প্রতীক্ষায় আমি নির্ঘুম রাত কাটানো এক নিশাচর,
আমি কুয়াশার পাখনায় ভেসে বেড়ানো গৃহহীন অরিয়ল,
পাহাড়ের ছাদ থেকে পতিত চঞ্চল জল,
চপলমতি জোনাকির পাখার প্রখর শব্দ,
পূর্ণমাসীর রাতে নিশাকান্তের চন্দ্রিমা।
অপেক্ষার প্রহর গুনছি,
আমার গগনপটে হবে কি তুমি পূর্ণিমা?
তোমার প্রতীক্ষায় আমি বৃষ্টিস্নাত রাতের বৃষ্টিবিন্দুর শব্দগ্রহ,
ইন্দ্ৰচাপের ছায়া পতিত স্বচ্ছ কাঁচের আয়না।
মন-মোহিনী সাত রং তুমি,
তাই খুঁজি তোমাতে মেশবার বায়না।
প্রণয়াসক্ত গোলাপি ঠোঁটদুটোর প্রসারণে তোমায় খুঁজি।
আমি যে তোমার অপেক্ষায় দুপুর জাগা সাঁওতালপল্লির মাঝি।
তোমার প্রতীক্ষায় আমি নদীকান্তে ভেসে বেড়ানো তরঙ্গায়িত আন্দোলন,
তোমাকে কাছেপিঠে পেলে হবে পূর্ণ এ জীবন।
আমি হেমন্তিকার উষ্ণ বেনারসি চাদর,
মাথা রাখবো তোমার কোল-আঁচলে,
করবে কি আমায় তুমি আদর?
আমি ঝিঙালতার সোনালি ফুলে বসা এক মৌমাছির গুনগুন,
মধুকালে সরস্বতী পূজার মন্ত্র উচ্চারণ।
তোমার প্রতীক্ষায় আমি শীতের ভোরে ঘাসের সরু ডগায় ফুটন্ত শিশির,
বিকেলে খেলতে বের হওয়া কিশোরের মুখের হাসি,
আমাকে ভাসতে পারবে ভালো?
তোমায় যে আমি বড্ড ভালবাসি।
বকঠুঁটো মাছের তীব্র সবুজে লুকিয়ে আছো কি তুমি?
তোমার প্রতীক্ষায় আমি মুঠোফোনের স্তমিত ইষৎ আলো,
ডালপালাযুক্ত বঁইচির অম্লমধুর নির্যাস,
তোমাতে লুকিয়ে আছে এই এডভেঞ্চারের মহা বিলাস।
তোমার গন্ধ ভেসে আসে ঠান্ডা হাওয়ায়,
মাতাল করে দিয়ে যায়।
কতকাল বসে রবো আর তোমার প্রতীক্ষায়?
কতকাল নিঃসঙ্গ হয়ে বসে রবো তোমার অপেক্ষায়?
নিঃসঙ্গ নিস্তব্ধতায় এভাবে রাত কাটাতে হবে না, এই তো আমি এসেছি।
সন্দিপনে আমিও যে তোমায় ভালোবেসেছি।
চলো আজকে এক হয়ে মিশে হই একাকার,
তুমি বলেছিলে,'আমায় এনে দেবে পাতাবার, কোথা সেই উপহার?'
এই নাও, এবার তাহলে করি উপসংহার।