স্বপ্নে, প্রায়ই আমার দেখা হয়-
রবিনসন ক্রুসোর সাথে।
যিনি জীবনের লম্বা পথে,
নির্জন দ্বীপকে নিয়ে পাড়ি দিয়েছিলেন অকুতোভয়,
যদি একলাই থাকতে হয়,
তবে সঙ্গী হিসেবে একটা আস্ত দ্বীপ,
ব্যাপারটা মোটেও মন্দ নয়।


নারিকেল গাছের প্রাচীর,
দানবীয় পর্বত, গহীন অরণ্য,
আর জোয়ার-ভাটার সাথে-
তাস খেলে সময় কাটানো...
আমার ছোট্ট কুঁড়েঘরই তখন,
রাজকীয়, বিলাস-বহুল ক্যাসিনো...


সোনালি-রুপালি মাছ,
লাল-লাল কাঁকড়া,
রঙিন প্রজাপতি,
বুনো-হাঁসের ঝগড়া,
উঁচু ঢেউয়ের গর্জন,
সাথে ঝরনার কলতান,
আর হেঁড়ে-গলায়,
গেয়ে যাওয়া গান...


নিজ হাতে ধরা-বিরাট মাছের ভাজা,
প্রচুর আমগাছ-ঝুলছে ফলের রাজা,
শিকার করা বনমোরগের বার-বি-কিউ...
ডেজার্ট হিসেবে মধু, বুনো ফুলের যদিও...
মৌমাছি দের দাওয়াত দিতেই হবে তবুও।


পাহাড়ের চূড়ায় বসে,
দিনের প্রথম সূর্যকে পাওয়া,
ঝাঁঝালো রোদকে আপন করে নেয়া,
গাছের ছায়ায়, ঘাসের চাদরে শোয়া,
স্বপ্নিল, ঘুমের-রাজ্যে গড়াগড়ি খাওয়া...
তারপরও যদি বিরক্তি লাগে,
সাগর তলের প্রবাল-শৈবালের,
জমকালো ডিস্কো-পার্টিতে যাওয়া।


যদিও জানি, এগুলোই যথেষ্ট...
তারপরেও, ল্যাপটপ-আইফোন-আইপড,
প্রচুর সিগারেট আর খনিকটা মদ...
এতটুকু পেলেই, হয়ে যেতাম তুষ্ট...


এক সময় একাকীত্বই ছিল ভয়,
এখন, তাকেই সবচেয়ে বেশী সময় দেই,
আগে একাকীত্ব ধাওয়া করতো রেগে...
আর এখন, নিঃসঙ্গতাই আমার,
সবচেয়ে ভালো লাগে...
জন-মানবহীন, সেই দ্বীপের স্বপ্ন,
দেখি জেগে জেগে...