মনে রাখিস নিকিলেশ-
“একদিন আমাদেরও একটা আকাশ হবে” ।
এই কথা বলে চলে গেলো অনিকেত ।
সেই থেকে নিকিলেশ রোজ ঘর থেকে বাহির হয়
চারিদিকে তাকায় কিন্তু সেই আকাশ আজো পেলোনা ।


কলিম প্রতিদিন অফিসে যায় এক কিলোমিটার হেঁটে বা বাসে
ইদানিং ফুটপাতে জ্যাম লেগেই থাকে
তবু ঘরে ফিরে কলিকে বলবেই-
দেখো- “একদিন এই শহরটা আমাদের হবে”
সেই থেকে কলি আজো রোজ খুঁজে সেই শহর ।


এই সেমিস্টার শেষে ছুটিতে বাড়ী ফিরেই
একটা কিছু করবোই, বলে দেবো ঘরে - তোমার কথা
এই ভাবে আর আটকিয়ে যায় না রাখা ।
গত কিছু বছর ধরে এই একই কথাই বলছে লাবণ্য ।
গ্রামে অষ্ট প্রহর কাটছে একা লাভনীর !
লাবণ্য শহরের বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপে বিদেশে পাড়ি জমায়
আর লাভনী ………..!


কর্মব্যস্ততায় সংসারে হয়না দেয়া সময় !
এই অভিযোগ গৃহিণীর !
এই তো ‘অবসর’ মাত্র এক বছর পর
তখন সময়-সময় পাবে তুমি মোরশেদা ।
দেখতে-দেখতেই ‘অবসর’ !
আর মোরশেদ নেয় পরপাড়ে আসন !


দেখিস বাবা বড় হলে; “আমাদেরও একটা লাল গাড়ী হবে”
এই বলে আরিফ সাহেবের শান্তনায় কান্না থামায় ছেলে নাফিজ।
নাফিজ আজ বড় হয়েছে !
অনেক বড়, একটি মাল্টিন্যাশানাল কোম্পানীর উচ্ছ পদে
অনেক গুলো গাড়ী তার নিজস্ব একান্ত
অথচ আরিফ সাহেব হয়েছেন গত !
দেখা হয়নি আর লাল গাড়ী খুঁজে নিয়েছেন আপন বাড়ী ।
এই ভাবেই নিকিলেশ, অনিকেত, লাবণ্য-লাভনী
সময়ের নিয়মে মোরশেদ-মোরশেদা, কলি–কলিম
অথবা আরিফ-নাফিজ আমাদের এই সমাজেই বেঁচে থাকে ।


মে-জুন ২০১৮