ইতিহাসে লাখো সীতা পুড়েছে
পরাগত স্বামীর সতী হয়ে,
কতকটা নিজের ইচ্ছায়
কতকটা মাদকতায়,
কতকতা তোমাদের চাপে,
কতকতা বাধ্য হয়ে,
ইতিহাস বলে না পুড়েছে কোনো
স্বামী কোনো স্ত্রীর তরে,
পুরাণ বলে না কখনো পুরুষ পুড়েছে
কোনো নারীর জন্য,
ইতিহাস চায় নারী মরুক,
নারী ত্যাগ করুক,
সতীর মত,সীতার মত,বেহুলার মত
নাচুক,দেবতাদের খুশি করুক,
অসুরকেও খুশি করুক,
রাবণের চিত্ত হরণ করুক,
সুরাসুরকে সুরা পান করাক,
দেহসৌষ্ঠব দান করুক,
দেহপল্লবীর বীতরাগ শোনাক,
আর তাইত সাধু সন্তুরা করেছে কয়েক বিবাহ,
কচি কোমলদের বধু বানিয়ে যখন লুটেছ
তাদের সর্বস্ব,মরণের কামড় যখন ধরে নি,
তখনো ভাবো নি করবে কি বালিকারা হয়ে
গেলে তুমি নিঁখোজ,অসুস্থ!
ইতিহাস কখনো বলে নি সাধুরা লোভী ছিল,
তারা বিকারগ্রস্থ ছিলো,
নারী যদি স্বেচ্ছায় হয় সাধিকা সেটা ভিন্ন কথা!
কিন্তু ইচ্ছা বা স্বেচ্ছা কখন আসবে?
কলিকে বিকশিত হতে দেয়ার আগেই যখন দুমড়ে
মুচড়ে অধিকার করলে?
তাই তো বিধান বানিয়েছ তোমার অবর্তমানেও
থাকতে হবে সতী যেমনটা বর্তমানে,
অতীতে,সুদূর ভবিষ্যতে,
অন্য পুরুষের ছোঁয়া লাগবে না তার কোমল শরীরে,
কারন তুমি ত সবজান্তা,আকাশ থেকেও ঈগল চোখে তাকে দেখবে!
তোমার পরম স্ত্রী করতে পারবে না কোনো সাধনা,
গাইবে না সে কোনো গান,
তুলবে না সুর,
না হয় সে হস্তগত হবে অসুরের,
নির্মলাসুন্দরী একজন হয়
তবে সে সাধিকা,সন্ন্যাসী ব্রতের কি অদ্ভুত ভূমিকা!
এখানেও তাকে নির্মোহ করেছ,
বলেছ জ্ঞানী হলে দেহসুখ ত্যাগ করতে হবে
অথবা সাধক বাবা 'পরম গুরুর' কাছে দেহতে লীন
হয়ে যেতে হবে,
তখনই আসবে চৈতন্য,সাধক পুরুষের চিত্ত প্রবেশ
করবে নারীতে!
তাই তুমি নারীকে মরতে দাও,
মেরে ফেল,হয় গলাটিপে নাহয় আগুনে পুড়িয়ে মারো,
দেবীকে ডাইনী বানাও,পাথর ছুঁড়ে মারো,
দুর্বলাকে দেবী বানাও,করো পুজাপাঠ,
অথবা কবরে পুঁতে ফেলাও,
আলো দেখবার আগেই অন্ধকারে শুইয়ে দাও,
কিন্তু নারীকেও দরকার তোমার!
নাহয় আসবে না তোমার চৈতন্য,বৃহৎ অস্তিত্ব,
ঘটবে না তোমার বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ,কারন
নারী সকল কিছুর ধারক,
বুঝবে না প্রকৃতি,বুঝবে না রহস্য,
হবে না জটিল,
জয় করতে পারো না কিছু,
কারন তুমি নিজেকে স্বঘোষিত বিজেতা মনে করতে
পারো কিন্তু বরাবরই আমি তোমার কাছে অপ্রতিরোধ্য এক
চ্যালেঞ্জ,
তাই তুমি নারীকে বাঁচতে দাও,
অধোস্থন করে রাখো,
পর্দায় রাখো,
কেন এই দ্বিমুখিতা?
যদি নারী পর্দা করে তবে সে তোমার সাথেও
পর্দা করবে,ঘরে এবং বাইরে,তুমি অধিকার ফলাতে পারো না,
যদি নারী পর্দা খুলে তবে তার পর্দা সে খেয়াল খুশি মত
খুলবে তুমি কিছু বলতে পারো না,
তুমি নারীকে সহযাত্রী হিসেবে চাও কিন্তু
সবসময় বা পাশে,এক স্তর নিচে,
এবং কৃতি সুন্দরীর প্রতি তোমরা সবচেয়ে
বেশি আকর্ষিত হও,কিন্তু তাকেও রেখে দিতে চাও প্রিয়
ফুলশয্যার মত,চাও সে তোমার মত ভাবুক,তোমার জন্য ভাবুক এর বেশি না,
তুমি তার মেধাকে ব্যবহার করতে চাও তোমার গৃহ সাজাতে,
তার কীর্তিকে ধার করতে চাও তোমার প্রতিষ্ঠা উজ্জ্বল করতে
এবং এই উত্তরাধুনিক সময়ে লোকজনকে দেখাতে যে
তুমি কতটা সফল,তোমার সফলতা নির্ভর করে কৃতি নারীর উপরে,
কিন্তু নারীর কৃতিত্বও তুমি দখল করতে চাও,
অংশিদারিত্ব করো,ভাগ বসাও,
মেহনতের জমিতে তোমরা লাঙ্গল চাষ করো
এবং সার দিয়েই বলো ফসল সব তোমার!
আসলেই তো তোমরা চাষী,জমি তোমাদের,
ফসল সব তোমার!!